10.5 C
Düsseldorf

সয়াবিনের অগ্নিমূল্যঃ জার্মানি ভার্সেস বাংলাদেশ

Must read

গোলজার হোসাইন খান
গোলজার হোসাইন খান
আমি সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর একজন অবসরপ্রাপ্ত এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার।অতি সাধারণ মানুষ। কোন উচ্চাভিলাষ নেই। সাংসারিক বোধবুদ্ধি শূন্যের কোঠায়। হেরে যাওয়া মানুষের পাশে থাকি।এড়িয়ে চলি স্বার্থপরতা।বিনম্র শ্রদ্ধায় নত হই সৃষ্টিশীল-পরিশ্রমী মানুষের প্রতি আর ভালবাসি আমার পেশাকে।

সবাই জানে বাঙালির রান্নায় সয়াবিন তেলটাই ঢালা হয় বেশি৷ তার দাম যদি হঠাৎ লিটারপ্রতি বেড়ে যায় ১২ টাকা তবে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়৷ যদিও জার্মানিতে দাম বেড়েছে তারও বেশি কিন্তু সেখানে আয়ের তুলনায় মূল্যবৃদ্ধি কম বলেই তেমন হাহাকার কানে আসে না।

বাংলাদেশে বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষ ছাড়াও কারণে অকারণে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বাড়ে৷ তবে এবার এক লাফে সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ১২ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে৷ বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ‌১৫৩ টাকায় বিক্রির ঘোষণা দেয়ার কথা জানিয়েছে। এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৫৩ টাকা শুনে অনেকটাই বেশি মনে হয়৷ বিশেষ করে মধ্যম বা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য৷ মহামারিতে বিশ্ববাজারে প্রায় সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই ভোজ্যতেলের দামও বাড়ানো হয়েছে ৷ এর সাথে দেশের ব্যবসায়ীদের কতটা সম্পর্ক, বলা কঠিন!

ভোজ্য তেলের দাম জার্মানিতেও বেড়েছে, বেড়েছে প্রায় সারা বিশ্বেই! আর জার্মানির কোনো কোনো দোকানে সয়াবিন তেলের দাম তো এখন বাংলাদেশের চেয়েও বেশি৷ যদিও আমাদের অনেকেরই তেমনভাবে সেটা নজরে আসেনি৷

জার্মানির বায়ারিশেস লান্ডভিয়ার্টশাফ্টলিশেস পত্রিকার তথ্যমতে জার্মানিতে২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের চেয়ে মার্চ মাসে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশ৷ যা কি না ২০১২ সালের পরে সর্বোচ্চ মূল্য বৃদ্ধি৷ তাছাড়া গত বছর মে মাসের তুলনায় এ বছর মে মাসে সয়াবিন তেলের দাম প্রায় দ্বিগুণ৷

জার্মানির আগ্রামার্কট ইনফরমেশন গেজেলশাফ্ট বা কৃষি বাজার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ১৯৯৫ সালের পর এ বছর এপ্রিল মাসে প্রথবারের মতো সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ মূল্য৷

জার্মানির ডিসকাউন্ট শপ আলডিতে ১ লিটার ভেজিটেবল তেলের দাম মাত্র ১ ইউরো ১৯ সেন্ট, যা মানুষের আয় অনুপাতে খুবই কম দাম৷ মোটামুটি দামী দোকান রেভে সুপার মার্কেটে এক লিটার ভেজিটেবল অয়েলের বর্তমান দাম এক ইউরো ৭২ সেন্ট অর্থাৎ বাংলাদেশি ১৭৭ টাকা৷ বাংলাদেশে ১৫৩ টাকা৷ শুধু তেলের দাম নয়, জার্মানিতে গম, ভুট্টা, চাল এসব শষ্যদানার মূল্যও গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে৷ বিদেশ থেকে আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্যের দামই যে বেড়েছে তা নয়, দেশে উৎপাদিত খাবারসহ অন্যান্য জিনিসের দামও তুলনামূলকভাবে আগের চেয়ে বেশি৷

তবে দাম বাড়লেও ক্রয় ক্ষমতা সকল নাগরিকের নাগালের মধ্যে থাকায় এ বিষয়ে তেমন আলোচনা বা অভিযোগ শোনা যায়না৷

তাছাড়া সচেতন জার্মানরা বাড়িতে রান্নায় সয়াবিন তেল কম ব্যবহার করে থাকে৷ আর সূর্যমূখী, ভেজিটেবল, সর্ষে, তিল, বাদাম, পাম, বিভিন্ন ফলের বীজসহ কত রকমের তেল যে বাজারে রয়েছে৷ রয়েছে মাখন, ডালডা, মার্জারিনসহ নানা ধরণের তেল বা ফ্যাট রান্না, খাওয়া বা ভাজাভুজির জন্য৷ বলা যায় সয়াবিন বা ভেজিটেবল তেলের দাম বাড়লেও এখনও সব তেলের চেয়ে দাম কম৷ স্বাস্থ্যকর তেল অলিভ অয়েলের দাম সবসময়ই সবচেয়ে বেশি জার্মানিতে৷

তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, সয়াবিন বা রান্নার তেলের দাম নিয়ে জার্মানরা তেমন মাথা না ঘামালেও গাড়ির তেলের দামের খোঁজ রাখে৷ গ্যালন প্রতি কয়েক সেন্ট দাম বাড়ার খবর শুনলেই আগেভাগে পেট্রোল পাম্পের দিকে ছোটে তারা৷ কেউ কেউ আবার চলন্ত গাড়ির গতি কমিয়ে উঁকি দিয়ে পেট্রোল স্টেশনে তেলের দাম চেক করে নেয়৷

- Advertisement -spot_img

More articles

মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে অনুগ্রহ করে আপনার নাম লিখুন

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ আপডেট