করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেন লাগামহীন। কোনোভাবেই আয়ত্তে আনতে পারছেন না স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। যাঁরই করোনা হচ্ছে, তাঁকে যেতে হয় মানবিক এক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে। সংক্রমণের আশঙ্কায় রোগীর কাছ থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। যাঁদের অবস্থা সংকটাপন্ন, তাঁদের ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। ফলে তিনি হয়ে পড়েন অনেকটাই একা। মানসিকভাবে শূন্যতা অনুভব করতে শুরু করেন। এমন রোগীদের জন্য স্বজনের হাতের স্পর্শের অনুভব দিতে এক অভিনব পন্থা বের করেছেন ব্রাজিলের নার্সরা।
করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ব্রাজিল। হাসপাতালের শয্যায় রোগী যেন মনে করেন কেউ তাঁর হাতটি ধরে রেখেছেন, সেই উপায় বের করেছেন দেশটি একদল নার্স। তাঁরা একবার ব্যবহারযোগ্য গ্লাভসের ভেতর গরম পানি ভরে তা বেঁধে দেন। এভাবে পানিভর্তি দুটি গ্লাভস রোগীর হাতের তালুর নিচে ও ওপরে দেওয়া। রোগীর মনে হবে কেউ তাঁকে পরম মমতায় ধরে রেখেছেন।
আইসোলেটেড রোগীর এমনই একটি ছবি গালফ নিউজের ওপিনিয়ন এডিটর সাদিক সামির ভাট টুইটারে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘বিধাতার হাত’। ব্রাজিলিয়ান একটি আইসোলেশন ওয়ার্ডে আইসোলেটেড রোগীদের একটু মানসিক শান্তি ও সাহস জোগাতে নার্সদের চেষ্টা। একবার ব্যবহারযোগ্য দুটি গ্লাভসে সহনীয় মাত্রার গরম পানি ভরে হাতের অনুকরণে মানবিক স্পর্শ। সম্মুখসারির যোদ্ধাদের স্যালুট।
অনেকে এই পোস্টে লাইক দিয়েছেন ও শেয়ার করেছেন। প্রায় সবাই ছবিটিকে এ সময়ের খুবই মর্মস্পর্শী ছবি বলে দাবি করেছেন।
ব্রাজিলে চলতি সপ্তাহে প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার করে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। গত মঙ্গলবার দেশটিতে ৪ হাজার ১৯৫ জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে ৩ লাখ ৩৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হলো।
দ্য গার্ডিয়ানের খবর বলা হয়, সংক্রমণের মাত্রা এ হার বাড়ার পরও দেশটির প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো লকডাউনের বিপক্ষে। তিনি বলেন, ‘কোনো লকডাউন দেওয়া হবে না। মানুষকে ঘরে রাখতে আমাদের সেনারা রাস্তায় নামবে না। স্বাধীনতা বড় অমূল্য।’
গত বছরের জুলাইয়ে বলসোনারো করোনায় আক্রান্ত হন। সেরে ওঠার পর তিনি বলেছিলেন, ‘আমি জানতাম, একদিন না একদিন আমার এ রোগ হবে। আমি মনে করি দুর্ভাগ্যজনক হলেও প্রত্যেককে এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তাই ভয় কিসের? মোকাবিলা করব।’