9.5 C
Düsseldorf

মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী দেশগুলোয় ১৭ বিলিয়ন পাউন্ডের অস্ত্র বিক্রি করেছে যুক্তরাজ্য

Must read

মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নাগরিক অধিকার দমনের জন্য বিশ্বের যেসব দেশ সমালোচনার মুখে রয়েছে, তার দুই–তৃতীয়াংশের কাছে গত এক দশকে অস্ত্র এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে। এসব দেশের কাছে প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি পাউন্ডের অস্ত্র বিক্রি করেছে তারা।

রোববার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মৌলিক মানবাধিকার ও জনগণের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করা হয়, এমন ৫৩টি দেশের তালিকা করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত মানবাধিকার সংস্থা ফ্রিডম হাউস। ওই তালিকায় থাকা ৩৯টি দেশের কাছে যুক্তরাজ্য সরকারের অনুমোদন দেওয়া অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি হয়েছে। গত এক দশকে মানবাধিকার প্রশ্নে সমালোচনার মুখে থাকা এসব দেশের কাছে ১ হাজার ৬৮০ কোটি পাউন্ডের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করেছে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র কোম্পানিগুলো। এসব দেশের তালিকায় লিবিয়া, সৌদি আরব ও তুরস্কের নাম রয়েছে।

এদিকে লন্ডনভিত্তিক বেসরকারি সংগঠন ক্যাম্পেইন অ্যাগেইনস্ট আর্মস ট্রেডের পর্যালোচনায় বেরিয়ে এসেছে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে যেসব দেশের তালিকা করেছে, সেগুলোর অধিকাংশ দেশের কাছেও অস্ত্র বিক্রি করেছে তারা। দমনমূলক শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান, এমন ৩০টি দেশের তালিকা করে যুক্তরাজ্য সরকার। সিএএটির তথ্যমতে, গত এক দশকে এই তালিকায় থাকা ২১টি দেশের কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছে বিভিন্ন ব্রিটিশ কোম্পানি। বিক্রি করা হয়েছে ১ হাজার ১৮০ কোটি পাউন্ডের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম।

এ সময় সংঘাতকবলিত লিবিয়ায় ৯৩ লাখ পাউন্ডের রাইফেল, সামরিক যান ও গোলাবারুদ গেছে যুক্তরাজ্য থেকে। দেশটিতে প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে স্থানীয় বিদ্রোহী দল ও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো যে যার জায়গা থেকে লড়ছে। ইয়েমেনে বিমান হামলা ও সংঘাতের জন্য সৌদি আরব সরকারের সমালোচনা করে থাকে ডাউনিং স্ট্রিট। অথচ ইয়েমেনের ভূখণ্ডে হামলা চালাতে ব্যবহৃত সৌদি বহরের অর্ধেকের বেশি যুদ্ধবিমান যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে।

যুক্তরাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগ বলছে, মিসর, বাহরাইন, কাতার, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, তুরস্কসহ ৯টি দেশ যুক্তরাজ্য থেকে রপ্তানি হওয়া অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের প্রধান ক্রেতা। এসব দেশের বেশির ভাগের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। এমনকি গত ১ দশকে রাশিয়ার কাছেও ৪ কোটি ৪০ লাখ পাউন্ডের অস্ত্র, গোলাবারুদ, স্নাইপার রাইফেল গেছে যুক্তরাজ্য থেকে।

এ বিষয়ে সিএএটির মিডিয়া প্রধান অ্যান্ড্রু স্মিথ বলেন, এই মুহূর্তে ইয়েমেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পেছনে যুক্তরাজ্যে তৈরি হওয়া অস্ত্রের বড় ভূমিকা রয়েছে। এমনকি যুক্তরাজ্য সরকার এখন যেসব অস্ত্র বিক্রি করছে, সেগুলো ব্যবহার করে আগামীতে ধ্বংসযজ্ঞ ও দমন–পীড়ন চালানো হতে পারে।

অ্যান্ড্রু স্মিথ আরও বলেন, যেখানে নিপীড়ন ও সংঘাত দেখা যায়, সেখানেই অস্ত্র কোম্পানিগুলো ব্যবসা খোঁজে। ব্যবসা করতে গিয়ে তারা একনায়ক ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের কাছেও অস্ত্র বিক্রি করে। তুমুল সমালোচনা থাকার পরও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের নীতিগত সমর্থন না থাকলে বিতর্কিত এসব দেশ ও শাসকদের সঙ্গে অস্ত্র ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারত না এসব কোম্পানি।

- Advertisement -spot_img

More articles

মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে অনুগ্রহ করে আপনার নাম লিখুন

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ আপডেট