ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ ফ্রান্স। তবে ফ্রান্সের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হল প্রকৃতির টান। ফরাসি দেশের প্রতি সবসময়ই পর্যটকদের টান একটু বেশি। মন্টমার্টে পাবলো পিকাসোর পাদদেশে ঘোরা, প্রভেন্সের সুগন্ধে শ্বাস নেওয়া, ডি–ডে সৈকতে খালি পায়ে বালিতে হাঁটা, এই সবকিছুই ফ্রান্সের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণকে বাড়িয়ে দেয়। তবে এই দেশের সব আকর্ষণ আরও একবার পর্যটকরা খুব সহজেই পেতে পারেন, যদি অধিকাংশ বিদেশি পর্যটকদের টিকা নেওয়া থাকে। আগামী সপ্তাহ থেকে শুধুমাত্র টিকাকরণ হয়েছে এমন পর্যটকরাই ফ্রান্সে প্রবেশ করতে পারবেন।
আন্তর্জাতিক পর্যটকদের যদি কোভিড টিকাকরণ নেওয়া হয়ে থাকে তবেই তাঁরা ফ্রান্সে আসার সুযোগ পাবেন। শুক্রবারই এই দেশের সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে টিকা গ্রহণকারী ইউরোপিয়ান ও বাকি বিশ্বের পর্যটকদের জন্য ফ্রান্সে করোনা ভাইরাস টেস্ট প্রত্যাহার করে নেওয়া হল। তবে আমেরিকাকে তাদের নেগেটিভ টেস্টের রিপোর্ট বহন করতে হবে।
বুধবার থেকেই এই নিয়ম জারি করা হবে, এতে ফ্রান্সের পর্যটন শিল্প কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াবে। তবে ভাইরাস বৃদ্ধি এবং উদ্বেগজনক ভ্যারিয়ান্টের সঙ্গে লড়াই করা দেশগুলি থেকে অবশ্য পর্যটকদের আসা সম্ভব হবে না। লাল তালিকাভুক্ত দেশগুলির মধ্যে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা,ব্রাজিল ও বাংলাদেশ সহ ১৬টি দেশের নাম রয়েছে।
ইউরোপের বাইরে, ফরাসি সরকার শুক্রবার প্রকাশিত নতুন ভ্রমণ বিধিপুস্তকে বিশ্বের বেশিরভাগ অংশকে ‘কমলা’ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। ব্রিটেন ও আমেরিকা সহ কমলা দেশগুলি থেকে পর্যটকরা এই দেশে আসতে পারেন। ফ্রান্সে আসার পর কোয়ারেন্টাইন ও ফ্রান্সে আসার কারণ জানানোর দরকার নেই। শুধুমাত্র তাঁদের টিকাকরণের সনদপত্র এবং ৭২ বা ৪৮ ঘণ্টা আগে করা করোনা টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট বহন করতে হবে। যেসব শিশুদের টিকাকরণ করানো নেই তারা টিকাকরণ হয়েছে এমন প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে ফ্রান্সে প্রবেশ করতে পারবে।
এ বছরের মার্চ মাসে নয়া করোনা স্ট্রেন ধরা পড়ে ফ্রান্সে। ফ্রান্সে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়তে শুরু করে দেয় এরপর। করোনা সংক্রমণ দমন করতে ফ্রান্সের সরকার একমাসের জন্য কড়া লকডাউন জারি করে। নতুন কড়াকড়ির আওতায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকানবাজার ছাড়া বাকি সব দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাতটা থেকে কার্ফু চালু হয়ে যায়। মানুষ নিজের বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটারের বেশি দূরে যেতে পারবেন না ৷ অর্থাৎ দেশের মধ্যে মানুষের যাতায়াত কার্যত বন্ধ রাখা হয় ৷ সারা দেশে তিন সপ্তাহের জন্য স্কুল পুরোপুরি বন্ধ রাখে সরকার।