হট ডগ।নাম শুনলেই জিভে জল আসে। পাউরুটির ভিতরে সসেজ ভরা। আর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মেয়োনিজ এবং চিজ। সব কিছুর মিশ্রণে তাবৎ দুনিয়ায় অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার হট ডগ।
যাঁরা হট ডগ খেয়েছেন বা এর কথা শুনেছেন তাঁদের প্রত্যেকের মনে অন্তত একবার হলেও এই খাবারের নাম দিয়ে প্রশ্ন জেগেছে। একে হট ডগ বলা হয় কেন? এতে কি কুকুরের মাংস থাকে?
হট ডগের সসেজ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় গরু, মুরগি কিংবা শূকরের মাংস। হট ডগের প্রতি কামড়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজলেও কুকুরের মাংস পাওয়া যাবে না।
মূলত জার্মানির খাবার হট ডগ। শরণার্থীদের সঙ্গে ইউরোপ থেকে আমেরিকায় প্রবেশ করে হট ডগ। এক সময় আমেরিকার জনপ্রিয় রাস্তার খাবারে পরিণত হয়েছিল এটি।
সে সময় মূলত কারখানার শ্রমিক, দিনমজুরদের কাছে জনপ্রিয় ছিল খাবারটি। রাস্তার ধারে চাকা লাগানো ছোট ঠেলাগাড়িতে করে বিক্রি করা হত এগুলি।
বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে পুরো আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়েছিল এই খাবার। আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় হট ডগ প্রস্তুতি প্রণালীও কিছু কিছু বদলে গিয়েছিল সেই এলাকার মানুষের স্বাদের রকমফেরে।
বিশ শতকে জার্মানিতে কুকুরের মাংস খাওয়ার চল ছিল। সেই অর্থেই অনেকেই মনে করতেন জার্মানির সসেজ কুকুরের মাংস দিয়ে তৈরি হত।
তাই সেখানে সসেজ-এর আর এক নাম হয়ে গিয়েছিল ‘ডগ’। ১৮০০ সাল থেকেই সসেজ-এর এই নাম প্রচলন হয়ে গিয়েছিল জার্মানিতে।
কিন্তু তখনও সসেজ ভরা পাউরুটিকে হট ডগ বলা হত না। এর নাম ছিল ডাচশান্ড সসে়জ।
আমেরিকার এক সংবাদপত্রের কার্টুনিস্ট ডাচশান্ড সসে়জকে ‘হট ডগ’ বলে উল্লেখ করে একটি কার্টুন এঁকেছিলেন। সেই কার্টুন এতটাই জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছিল যে তার পর থেকে এই সসেজ ভরা পাউরুটির নাম হয়ে যায় হট ডগ।
আসলে নিউ ইয়র্কের পোলো গ্রাউন্ডের বাইরে ঠেলাগাড়ি করে ডাচশান্ড সসে়জ বিক্রি করছিলেন এক জার্মান ব্যবসায়ী।
ওই ঠেলাগাড়িতেই গরম গরম বানিয়ে বিক্রি করছিলেন তিনি। আর চিৎকার করে ডাচশান্ড সসে়জ খাওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছিলেন দর্শকদের।
সংবাদপত্রের কার্টুনিস্ট থমাস আলয়সিয়াস দর্গানও কিছু দূর দাঁড়িয়ে বিষয়টি দেখছিলেন। নিউ ইয়র্কের পোলো গ্রাউন্ডে তখন বেসবল খেলা চলছিল। তিনি সে দিনের পরিস্থিতি একটি কার্টুনের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেন সংবাদপত্রে।
কিন্তু বিক্রেতা ঠিক কী নামে খাবারটির পরিচয় দিচ্ছিলেন তা তিনি বুঝতে পারেননি। তিনি বুঝেছিলেন ওটা আসলে সসেজ এবং গরম গরম সেটি পরিবেশন করা হচ্ছে।
জার্মানিতে এক সময় যেহেতু সসেজের অন্য নাম ছিল ‘ডগ’ এবং এটি গরম গরম পরিবেশন করা হচ্ছিল তাই কার্টুনে এই খাবারকে তিনি ‘হট ডগ’ বলে উল্লেথ করেন। তখন থেকেই এই নামটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।