৩০টি দেশের সদস্য ভুক্ত ন্যাটো বা উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা ব্রাসেলসে তাদের সোমবারের শীর্ষ সম্মেলন সমাপ্ত করেছে। নেতারা ন্যাটোর এই সামরিক জোটের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন, রাশিয়া এবং চীনের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তার মধ্য দিয়ে।
উভয় দেশকে “বিধি-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার জন্যে চ্যালেঞ্জ” বলে উল্লেখ করা হয়।
নিরাপত্তার বিষয়টি দিনদিন যেভাবে জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে তার মোকাবেলায়, নেতারা আন্ত-অাটলান্টিক সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে সম্মত হন।
জোটটি “নেটো ২০৩০” নামে একটি ব্যবস্থাপনা কৌশল গ্রহণ করেছে, যা ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা ও অপ্রত্যাশিত হুমকি মোকাবেলায় দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।
“নেটো ২০৩০”-এ, রাশিয়ার আগ্রাসী হয়ে ওঠার বিষয়টির পাশাপাশি, “সন্ত্রাসবাদের নৃশংস রূপ,” “চলমান অস্থিতিশীলতা”, “ক্রমবর্ধমান সাইবার এবং হাইব্রিড হুমকি”, নতুন প্রযুক্তি, মহামারী এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে নতুন হুমকি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে মস্কো সকল অভিযোগ অস্বীকার করলেও, পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে রাশিয়ার সাম্প্রতিক আগ্রাসন এবং পশ্চিমা দেশে গোপন সাইবার আক্রমণ নিয়ে জোট মিত্ররা ক্রমশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে।
পূর্বাভাস অনুযায়ী একটি ঠান্ডা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চলেছে বিশ্ব। এক দিকে বিশ্বের উন্নত অর্থনৈতিক দেশগুলির জোট জি-৭। অন্য দিকে চিন। সদ্যসমাপ্ত ব্রিটেনের জি-৭ শীর্ষ বৈঠকের পর এই সংঘাত প্রকাশ্যে চলে এল। জি-৭ বৈঠকের পরে যে বিবৃতিটি দেওয়া হয়েছে সেখানে নাম করেই তোপ দাগা হয়েছে বেজিংয়ের প্রতি। সে দেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুলে ঘোর নিন্দা করা হয়েছে। তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে হংকংয়ে আন্দোলকারীদের উপরে নিপীড়নেরও। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘‘চিনের উচিত মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধিবদ্ধতাকে আরও দায়িত্ব সহকারে মেনে চলা।’’
এখানেই শেষ নয়। চিনকে টেক্কা দিতে এ বার তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের বিকল্প হিসেবে একটি আন্তর্জাতিক মহা পরিকাঠামোর পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেছে জি-৭। নতুন ওই পরিকল্পনার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পরিকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করা হবে। পাশাপাশি ন্যাটো জোটের নেতাদের বৈঠক শেষে আজ সাংবাদিকদের ন্যাটোর কর্তা জেন্স স্টোলটেনবার্গ বলেছেন, ‘‘আমরা একটি নতুন ঠান্ডা যুদ্ধে প্রবেশ করছি না এবং চিন আমাদের প্রতিপক্ষ বা শত্রু নয়। তবে চিনের উত্থান আমাদের নিরাপত্তার জন্য যে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে জোট হিসেবে তার মোকাবিলা করা দরকার।’
এক দিন আগেই পশ্চিমের দেশগুলিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিল চিন। আজও জি-৭ নিয়ে গর্জন শোনা গিয়েছে ড্রাগনের। আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, কানাডা এবং ইটালির মতো দেশগুলির গোষ্ঠীকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে চিনের দাবি, ‘ছোট একটি গোষ্ঠীর’ তরফে বিশ্বের ভাগ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিন অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। লন্ডনে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেছেন।