‘যৌন হেনস্তাকারীদের সুরক্ষা দেওয়া বন্ধ হোক’, গুগলের CEOকে খোলা চিঠি কর্মীদের

Must read

গোলজার হোসাইন খান
আমি সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর একজন অবসরপ্রাপ্ত এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার।অতি সাধারণ মানুষ। কোন উচ্চাভিলাষ নেই। সাংসারিক বোধবুদ্ধি শূন্যের কোঠায়। হেরে যাওয়া মানুষের পাশে থাকি।এড়িয়ে চলি স্বার্থপরতা।বিনম্র শ্রদ্ধায় নত হই সৃষ্টিশীল-পরিশ্রমী মানুষের প্রতি আর ভালবাসি আমার পেশাকে।

কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের উপর শারীরিক হেনস্তা বা যৌন হয়রানির ঘটনা নতুন নয়। আর গুগলের (Google) মতো বিশ্বের প্রথম সারির তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাও সেই অভিযোগের বাইরে থাকেনি। এমনকি গুগলের ভিতর সেই অভিযোগ বারবার সামনে এসেছে।

গুগলের প্রচুর কর্মী অভিযোগ করেছেন, হেনস্তার বিষয়ে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর সমস্যা আরও বেড়ে গিয়েছে। এমনকি অভিযোগের কোনও সুরাহা তো হয়ইনি, উলটে হেনস্তাকারীকেই পুরস্কৃত করা হয়েছে, দেওয়া হয়েছে সুরক্ষা। এই অভিযোগ নিয়ে এবার সংস্থার ৫০০-রও বেশি কর্মী অ্যালফাবেট (গুগলের মূল সংস্থা) এবং গুগলের সিইও সুন্দর পিচাইকে (Sundar Pichai) খোলা চিঠি দিলেন। দিন কয়েক আগে মার্কিন সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমসে একটি চিঠি লেখেন গুগলের প্রাক্তন এক ইঞ্জিনিয়ার এমি নেটফিল্ড। যেখানে তিনি বর্ণনা করেন গুগলে কীভাবে তাঁকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। গুগল কর্মীদের খোলা চিঠিতে এমির সেই ঘটনার উল্লেখও করা হয়। যেখানে তাঁকে তাঁর হেনস্তাকারীর পাশে বসে কাজ করতে বাধ্য করা হয়।

এমি তাঁর লেখা চিঠির শিরোনাম দিয়েছেন, “গুগলের কাজ করার পর আমি আর কখনও কোনও চাকরির প্রতি ভালবাসা দেখাতে পারব না।” যেখানে তিনি অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে লিখেছেন, যিনি তাঁকে হেনস্তা করতেন তাঁর সঙ্গে একা মুখোমুখি বসে মিটিং করতে বাধ্য করা হয়। আর প্রতিবার যখনই তাঁর নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে অগ্রগতি নিয়ে কোম্পানির কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করতেন, তাঁকে বাড়ি থেকে কাজ করা বা ছুটিতে যাওয়া অথবা কাউন্সেলিং করানোর পরামর্শ দেওয়া হতো। এমি পরে জানতে পারেন, গুগলে তিনিই প্রথম নন, যাঁর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। এর আগে বহু কর্মীকে বর্ণবিদ্বেষ বা লিঙ্গবৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে।

গুগলে অ্যান্ডি রুবিন (অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সফ্টওয়ারের স্রষ্টা), ইঞ্জিনিয়ার অমিত সিঙ্ঘলের উদাহরণ রয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ ছিল। কিন্তু তাঁরা যখন কোম্পানি ছাড়েন তাঁদের বিপুল পরিমাণ আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে ২০ হাজারের বেশি কর্মী এই হেনস্তাকারীদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিবাদ করে চিঠি লেখেন। কিন্তু গুগল এ ক্ষেত্রে তার কর্মপদ্ধতিতে কোনও পরিবর্তন করেনি। হেনস্তাকারীদের সুরক্ষিত রাখার অভিযোগ আজও একইভাবে উঠছে গুগলের বিরুদ্ধে। নতুন করে আবার দাবি উঠল, গুগলের এই ‘নীতি’ পরিবর্তনের।
নতুন করে খোলা চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসার পর গুগলের তরফে দাবি করা হয়েছে, কোম্পানি এই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা এবং পদক্ষেপ করার ক্ষেত্রে তাদের কর্মপদ্ধতির উল্লেখ যোগ্য উন্নতি করেছে। অভিযোগকারীদের সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টিও তাঁরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।

এখন দেখার বিষয় এই সব অভিযোগ নিয়ে সুন্দর পিচাইয়ের নেতৃত্বাধীন গুগল কতটা তাদের ভাবমূর্তির উন্নতি ঘটাতে পারে।

- Advertisement -

মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে অনুগ্রহ করে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version