8.9 C
Düsseldorf

মুক্তির স্বাদে তুচ্ছ হলো গরমের হাসফাস

Must read

জার্মানিতে ভীষণ গরম পড়েছে৷ গ্রীষ্মের ফলমূল ও অন্যকিছুর দামও বেড়েছে কিছুটা, কিন্তু ভ্রুক্ষেপ নেই কারো৷ করোনা সংক্রমণ কমায় যে স্বস্তি ফিরে এসেছে তারই বহিঃপ্রকাশ সবার চোখেমুখে৷ গ্রীষ্মের জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে অন্যান্য শীতপ্রধান দেশের মতো জার্মানির মানুষও৷ তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি হলে অস্থির হয়ে ওঠে অনেকেই, যা স্বাভাবিক! আর গত কয়েদিন থেকে এমনই তাপমাত্রা চলছে জার্মানিতে৷ তবে এবার কিন্তু এত গরমেও অস্থিরতার বদলে বেশ আনন্দভাব দেখা যাচ্ছে মানুষের মধ্যে৷

জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে সারা বিশ্বেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে৷ ১৫- ২০ বছর আগেও জার্মানিতে ফ্যানের কথা ভাবা যেত না আর আজকাল প্রায় সব বাড়িতেই রয়েছে ছোট বড় নানা ধরনের ফ্যান৷ এমন কি কোনো কোনো বাড়িতে আজকাল এসিও দেখা যায়৷গত কয়েক বছর থেকেই লক্ষ্যনীয়,হঠাৎ করে গরম পড়লেই দোকানের ফ্যানগুলো ঝটপট বিক্রি হয়ে যায়৷ এবার কিন্তু ফ্যান কেনার তেমন হিড়িক এখনও দেখা যায়নি।

করোনার কারণে গত গ্রীষ্ম প্রায় সবারই ঘরবন্দি কেটেছে৷ আনন্দ বা বিনোদনের কোনো সুযোগ ছিল না৷ খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া হয়নি৷ তবে এরই মধ্যে জার্মানির শতকরা প্রায় ৫০ভাগ মানুষেরই করোনার টিকা নেয়া হয়ে গেছে৷ ফলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ অনেকটা স্বস্তি বোধ করছেন৷ চারদিকে চলছে গ্রিল পার্টির আয়োজন৷

জার্মানিতে গ্রীষ্ম মানেই চোখ জুড়ানো ফুলের সমাহার! মজার সব আইসক্রিম খাওয়া, গ্রিল বা বারবিকিউ পার্টি, নানা রং এর হালকা পোশাক পরা মনের আনন্দে ঘুরে বেড়ানো বিভিন্ন বয়সের মানুষ! আর চলে দেশ বিদেশে ভ্রমণের হাজারো পরিকল্পনা৷ করোনা সব আনন্দই কেড়ে নিয়েছিল যা ধীরে ধীরে আবার ফিরে আসছে৷

তবে এবারের গ্রীষ্মে দেখা যাচ্ছে অনেক কিছুরই দাম বেড়েছে, বিশেষ করে গ্রীষ্মের ফল৷ জার্মানদের প্রিয় ফল লাল টুকটুকে রসালো স্ট্রবেরি৷ প্রচণ্ড গরমে আসক্রিমের সাথে এই ফল খেতে দারুণ সুস্বাদু! জার্মানিতে উৎপাদিত এক কেজি অর্গানিক স্ট্রবেরির মূল্য এবার নয় ইউরো! অর্থাৎ, প্রায় ৯০০ টাকা৷ সুপারশপগুলোতে স্ট্রবেরি, চেরিসহ অন্যান্য গ্রীষ্মের ফলের দাম কিছুটা কম হলেও আগের তুলনায় অনেকটাই বেশি৷ করোনায় বিদেশ থেকে কৃষি শ্রমিকদের না আসতে পারাই মূল্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ৷ তবে এ নিয়ে কারো তেমন মাথা ব্যথা নেই! বিভিন্ন দেশ থেকে বাঙালির প্রিয় ফল প্রচুর আম এসেছে বাজারে৷ অন্যান্য ফলের তুলনায় বিদেশি আমের দাম বেশ কম তবে স্বাদের দিক থেকে দেশি আমের ধারে কাছেও না!

প্রায় দেড় বছর ঘরবন্দি থাকার পর এবারের গরম এক অন্যরকম অনুভূতি নিয়ে এসেছে৷ এ বছর গরমে শরীরের অস্বস্তির চেয়ে মনের আনন্দের মাত্রা বেশি, মানুষের চেহারা দেখে অন্তত তেমনটাই মনে হচ্ছে৷
করোনায় শুধু খাবার জিনিস নয়, তাজা ফুলসহ চারাগাছের দামও বেশ বেড়েছে৷ তাই বলে কিন্তু কোনো বাগানে ফুলের কমতি নেই!

কয়েকদিনের গরমে চারপাশের পরিবেশ জানান দিচ্ছে, মানুষ যেন আবার মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করছে৷
-ডয়েচে ভেলে।

- Advertisement -spot_img

More articles

মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে অনুগ্রহ করে আপনার নাম লিখুন

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ আপডেট