মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ১ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ

ইটালির দক্ষিণে অবস্থিত কালাব্রিয়া অঞ্চল কর্তৃপক্ষ মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে একটি বিশেষ প্রোগ্রামের জন্য ১ মিলিয়ন ইউরো অর্থ বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উক্ত প্রোগ্রামের আওতায় মানব পাচারের পাশাপাশি যৌনদাসত্ব, বাধ্যতামূলক ও শোষণমূলক শ্রম এবং অঙ্গ পাচারজনিত অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

২৬ জুন আঞ্চলিক সরকারের একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, “কালাব্রিয়া অঞ্চল কর্তৃপক্ষ দেশটির মন্ত্রিপরিষদ থেকে ‘মানব পাচারকারীদের হাতে নির্যাতিত ভুক্তভোগীদের শনাক্তকরণ, সুরক্ষা এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তির জন্য কালাব্রিয়ান উদ্যোগ নামক প্রকল্পটি পুনরায় অর্থায়ন করার জন্য ১০,৬৬,০০০ ইউরোর অর্থ সাহায্য পেয়েছে।”

বিভিন্ন পরিবেশে শোষিত এবং প্রায়ই পরাধীনতা ও দাসত্ব অবস্থায় জীবনযাপন করতে বাধ্য হওয়া নানান জাতীয়তার মানুষকে শনাক্ত করে মানব পাচার প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ এবং এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালে এই উদ্যোগটি শুরু করা হয়েছিল।

কালাব্রিয়ার সমাজকল্যাণ বিষয়ক কাউন্সিলর জিয়ানলুকা গ্যালো ২৬ জুন ইটালিয়ান সংবাদ সংস্থা আনসাকে বলেন, “স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং অভিবাসন ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে অভিবাসন বিভাগের কাজ ও দৃঢ় সংকল্পের কারণে প্রাপ্ত ফলাফল বেশ আশাব্যঞ্জক। প্রাপ্ত তহবিলের সাহায্যে আমরা কয়েক বছর ধরে চলে আসা সরকারি ও বেসরকারি নেটওয়ার্কের সাথে সমন্বয় করে যৌনদাসত্ব, জোরপূর্বক শ্রম, এবং অঙ্গ পাচারজনিত অপরাধের ঘটনার বিরুদ্ধে চলা লড়াই সামনের বছরগুলোতেও চালিয়ে নিতে সক্ষম হবো।”

বাধ্যতামূলক ও শোষণমূলক শ্রমের বিরুদ্ধে প্রকল্প
কাউন্সিলর জিয়ানলুকা গ্যালো আরও বলেন, “এই জাতীয় সমস্যাগুলি প্রায়ই কৃষিখাতে শ্রম শোষণের সাথে যুক্ত থাকে। অবশ্য এ সমস্যা সমাধানে কালাব্রিয়া অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ‘সুপ্রিম ইতালি’ এবং ‘পাই সুপ্রিম’ নামে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের সহযোগিতা নিচ্ছে। এছাড়া ইনসিপিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইটালির দক্ষিণের আরও চারটি অঞ্চল: বাসিলিকাটা, কাম্পানিয়া, পুগলিয়া ও সিসিলি শহরের সাথেও সমন্বয় করে কাজ করা হয়।”

“ইনসিপিত প্রকল্পের সাথে অভিবাসীদের পক্ষে কাজ করা সমিতি এবং এজেন্সি হিসাবে নিবন্ধিত এরকম সাতটি প্রতিষ্ঠান যুক্ত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থদের শনাক্তকরণ ও স্বীকৃতি আদায় থেকে শুরু করে তাদের সামাজিক-শ্রম পুনরায় অন্তর্ভুক্তির জন্য সহায়তা ও সুরক্ষার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। এছাড়া তারা ঘটনাবলির পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করতে আঞ্চলিক আবাসিক পদ্ধতিতে অভ্যর্থনা, পূর্ববর্তী সচেতনতা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আয়োজন করে থাকে,” যোগ করেন কাউন্সিলর।

অভিবাসনের ফলে শোষণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়
জিয়ানলুকা গ্যালো তার পর্যবেক্ষণে বলেন, “অভিবাসনের কারণে শোষণ ও হিংসার ঘটনাগুলি আরও তীব্র আকার ধারণ করে। বিশেষ করে নারী এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।” “দৃঢ় পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য। মানব পাচারকারীদের অগ্রগতি সর্বাবস্থায় পর্যবেক্ষণ ও মোকাবেলায করা একটি কঠিন কাজ কিন্তু ক্যালাব্রিয়া তার মৌলিক কাজ ও ভূমিকা অব্যাহত রাখবে,”।

- Advertisement -

মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে অনুগ্রহ করে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version