‘ব্রাজিলিয়ানরা জঙ্গলের লোক, তারা জঙ্গল থেকে এসেছে আর আমরা আর্জেন্টাইনরা এসেছি ইউরোপ থেকে’, এমন মন্তব্য করেছিলেন আর্জেন্টাইন প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তবে মন্তব্য করার কয়েক ঘণ্টা পরেই ব্রাজিলিয়ানদের প্রতিক্রিয়ার মুখে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে নিজেদের ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত দাবির সমর্থনে মেক্সিকান নোবেলজয়ী কবি অক্টাভিও পাজের একটি লেখার উদ্ধৃতিও দিয়েছেন। খবর এনডিটিভির।
সফররত স্প্যানিশ প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেজ বুয়েনস আয়ার্সে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে আর্জেন্টাইন প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজও উপস্থিত ছিলেন। সে সময় তিনি বলেন, আমরা ইউরোপীয়। আমরা ইউরোপ থেকে এসেছি এবং ইউরোপীয় ধারায় সভ্যতা গড়ে তুলেছি। নিজের দাবির সমর্থনে তিনি মেক্সিকান কবি অক্টাভিও পাজের একটি লেখারও উদ্ধৃতি দেন। তিনি বলেন, অক্টাভিও পাজ লিখেছেন, মেক্সিকানরা আদিবাসী থেকে, ব্রাজিলিয়ানরা জঙ্গল থেকে আর আর্জেন্টাইনরা নৌকায় করে এসেছে। আমি মনে করি সেগুলো ছিল ইউরোপ থেকে আসা নৌকা। তাই আমরা আর্জেন্টাইনরা ইউরোপীয়। আমরা আমাদের সমাজ তৈরি করেছি।
ফার্নান্দেজের বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়ে যায়। ব্রাজিলে এর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
ব্রাজিলিয়ান সিনেটর সিরো নোগুইরা টুইটারে বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে নাজি যুদ্ধাপরাধীরা আর্জেন্টিনায় কেন লুকিয়েছিল, তা আমি আরও ভাল করে বুঝতে পারছি।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো টুইটারে নিজের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখা যায় তিনি পালকের হেডব্যান্ডপরা একটি ছবি পোস্ট দিয়েছেন। ছবিটিকে ঘিরে আছে একদল আদিবাসী। ছবিটির ক্যাপশন দিয়েছেন ‘জঙ্গলে’।
মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফেলিপ ক্যাল্ডারন জানতে চেয়েছেন, ফার্নান্দেজ যে উদ্ধৃতি দিয়েছেন সেটা আসলেই অক্টাভিও পাজের কিনা। তার মতে, এধরনের কথা মেক্সিকান কৌতুকাভিনেতা ক্যান্টিনফ্লাস বা আর্জেন্টিনার কৌতুকাভিনেতা লেস লুথিয়ররা বলতে পারতেন, কিন্তু অক্টাভিও পাজ? তিনি আর্জেন্টাইন প্রেসিডেন্টকে তার দাবির সূত্র উল্লেখ করতে বলেছেন।
এর কয়েক ঘণ্টা পর আর্জেন্টাইন প্রেসিডেন্ট তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান। তিনি লিখেছেন, ‘আমি আমাদের কথাই বলেছি। কাউকে খাটো করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না।’
ফার্নান্দেজ লিখেছেন, ‘বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে আমরা পঞ্চাশ লাখেরও বেশি অভিবাসী পেয়েছি যারা আমাদের আদিবাসীদের সাথে বসবাস করেছিল। আমরা আমাদের জনবৈচিত্র্যে গর্বিত।’