বুলগেরিয়ার এক গুহা থেকে ৪৫ হাজার বছর আগেকার মানুষের দেহাবশেষের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেই দেহাবশেষের ডিএনএ থেকে হোমো স্যাপিয়েন্স প্রজাতি সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য জানা গেছে। বুধবার বিজ্ঞানীরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, তিন দেহাবশেষই পুরুষদের। তাদের হাড় ও দাঁতের অংশ থেকে পাওয়া ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। সেই সঙ্গে সেখানে মিলেছে ৩৫ হাজার বছর আগেকার এক মহিলার দেহাবশেষও। এই সব ক’টি দেহাবশেষই পাওয়া গিয়েছে বুলগেরিয়ার বাচো কিরো গুহা থেকে।
আজ থেকে ৩ লাখ বছর আগে মানুষের সর্বাধুনিক প্রজন্ম হোমো স্যাপিয়েন্সের আবির্ভাব ঘটেছিল আফ্রিকায়। পরে তারা পৃথিবীর অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, সেই সময় পৃথিবীতে হোমো স্যাপিয়েন্স ছাড়াও নিয়ান্ডারথাল মানুষরাও ছিল। তারা বিলুপ্ত হয় ৪০ হাজার বছর আগে। তবে তার আগে তাদের সঙ্গে হোমো স্যাপিয়েন্সের মিশ্রণ ঘটেছিল। এই নতুন দেহাবশেষ থেকে সেবিষয়ে স্পষ্ট ধারণা করা গেল।
ডিএনএগুলি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তার মধ্যে ৩ থেকে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ নিয়ান্ডারথাল ডিএনএ। লন্ডনের গবেষক মাতেজা হাজডিনজাক এ বিষয়ে বলতে গিয়ে জানিয়েছেন, নিয়ান্ডারথালের সঙ্গে যে হোমো স্যাপিয়েন্সদের মিশ্রণ হয়েছিল, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ ওই দেহাবশেষগুলির ডিএনএ। একই মত গবেষক সান্তে পাবোরও। তার কথায়, ‘এর থেকে প্রমাণ মিলল যে আধুনিক মানুষের আদিম প্রজন্ম নিয়মিত নিয়ান্ডারথালদের সঙ্গে মেলামেশা করত। এবং এটাই হয়তো তাদের অবলুপ্তির অন্যতম কারণ ছিল। তারা আসলে এই বৃহৎ মানব পরিবারের মধ্যে মিশে গিয়েছিল।’
প্রসঙ্গত, নিয়ান্ডারথালদের অবলুপ্তির আরও একটি কারণের কথা বলেন বিজ্ঞানীরা। কারও কারও মতে, আজ থেকে ৪২ হাজার বছর আগে পৃথিবীর মেরুদ্বয়ের প্রান্ত বদলের কারণেই অতিকায় স্তন্যপায়ী প্রজাতি মেগাফনা ও নিয়ান্ডারথাল মানবরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা।