5.3 C
Düsseldorf

বিষন্নতা

Must read

মন খারাপ থাকা। খুব বেশি ঘুমানো। আগে খুবি ভালো লাগতো, মজা লাগতো যেসব বিষয়ে তা আর ভালো লাগেনা কিছুতেই। এইসব অনুভুতি আমাদের মনে কেবলই আসা যাওয়া করে। কিন্তু এই অনুভুতি গুলো যদি দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় তাহলেই সমস্যা, তখনি হতে পারে এটি বিষন্নতা (ডিপ্রেসন/Depression) এর পূর্বাভাষ। বিষন্নতা একটি মারাত্মক মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধি, যার চিকিৎসা করা খুব জারুরি।

যে কোন বয়সের মানুষেরই এই সমস্যা হতে পারে এমন কি কিশোর/কিশোরী দের মধ্যেও এই ব্যাধি প্রকট এখন। ১৮ বছর বয়সের প্রতি ৪ জনের মধ্যে কমপক্ষে একজন কিশোর/কিশোরী বিষন্নতা বা হতাশায় ভোগে। প্রকৃতপক্ষে, এটি অবাক হবার মত কোনো তথ্য আজ আর নয় বরং এটি এখন একটি প্রধান ব্যাধি সমাজে।

বেশির ভাগ মানুষই ভাবে বিষন্নতা হল মন খারাপ। কারো কারো হয়ত বিষন্নতায় মন খারাপ হয় কিন্তু বেশির ভাগ মানুষই তার দৈনন্দিন জীবনের কার্যকলাপ থেকে দূরে সরে যায় বা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

বিষন্নতায় ভোগা মানুষ তার সবচাইতে ভালো লাগার যে কাজ সেটিও করতে ভুলে যায় বা ইচ্ছা করেনা। শুধুই শুন্যতা অনুভব করে তারা ভিতরে ভিতরে। কারো হয়ত ঘুম হবেনা আবার কারো হয়ত অধিক ঘুম হবে, কেউ খেতেই পারবেনা আবার কারো খাওয়া বেড়ে যাবে, এইরকম আরো অনেক এবনরমালিটি দেখা দিবে।

বেশির ভাগ হতাশায় ভোগা মানুষ কেই দেখা যাবে সব নেতিবাচক ঘটনায় তারা সাড়া দিচ্ছেন। এই নেতিবাচক ঘটনার দিকে ফোকাস থাকা কে বলে রুমিনেসন (Rumination) (Rue-mih-shun)। এতে করে মানুষ তার জিবনের ঘটে যাওয়া খারাপ ঘটনা গুলকেই নিয়ে শুধু ভাবতে থাকে। যার দরুন তারা তাদের চিন্তায় এই খারাপ থাকার চক্রের ভিতরেই থাকে এবং দিনে দিনে আরও বেশি খারাপ হতে থাকে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য। বিজ্ঞানীরা অবশ্য নিশ্চিত না যে রুমিনেসন (Rumination) বিষন্নতা এর কারন কিনা কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়ার Stanford University এর মনোবিজ্ঞানী Ian Gotlib বলেছেন যে এটি বিষন্নতাকে স্থায়ী করে নিশ্চিত।

বিষন্নতার যেসব লক্ষণঃ

  • সারাদিন ক্লান্ত লাগবে, কিন্তু ঘুম হবে না ঠিকমতো
  • আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না
  • নিরাশ লাগবে সারাক্ষণ
  • আগে যে সব অ্যাক্টিভিটির সঙ্গে যুক্ত থাকতেন, সেগুলি আর আপনাকে আকর্ষণ করবে না
  • শরীরে অস্বস্তি বা ব্যথা-বেদনা বাড়বে
  • নিজেকে ভালো লাগবে না
  • খাওয়া দাওয়ার ধরনে অসঙ্গতি
  • মনঃসংযোগে সমস্যা
  • ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা বাড়বে

 

উপরের এই নয়টি লক্ষন এর ভিতরে অন্তত পাঁচটি যার মধ্যে বিদ্যমান বুঝতে হবে যে তিনি মানসিক সমস্যা বা বিষন্নতায় ভুগছেন। এমন অনেকেই আছেন যারা এর সবকটি লক্ষণ এর ভিতর দিয়েই যাচ্ছেন। আমরা শরিরের অসুখ হলে চিকিৎসা নেই। কিন্তু মনের অসুখ কে শুধুই অবহেলা করি না বরং এই বিষয়টা জানতে, বুঝতে এবং মানতেও রাজি নই। দুঃখের হলেও সত্যি যে আমাদের বাঙালিদের কাছে এই ব্যাধি কেবলই একটা বিলাসিতা।

সত্যিটা হচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই বিষন্নতায় ভুগতে পারে এবং বিষন্নতার কারণে ঘটে যেতে পারে মারাত্মক কোন দূর্ঘটনা। আশার কথা হচ্ছে এই রোগের চিকিৎসা রয়েছে এবং এর থেকে মুক্তি পাওয়াও সম্ভব শুধু প্রয়োজন উদ্যোগ এবং আপনজনদের সাহায্য।

- Advertisement -spot_img

More articles

মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে অনুগ্রহ করে আপনার নাম লিখুন

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ আপডেট