দলবেঁধে বিশ্ব চালানোর দিন শেষ। কয়েকটি দেশের ‘ছোট’ একটি গ্রুপ বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ করবে- সেই দিন এখন আর নেই।
রোববার জি-৭ নেতাদের হুশিয়ারি দিয়ে এ মন্তব্য করেছে চীন। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ৩ দিনের জি-সেভেন সম্মেলনে শনিবার চীন বিরোধী ঐক্যের প্রতিক্রিয়ায় পরদিন লন্ডন দূতাবাস থেকেই এ বিবৃতি দিয়েছে চীন। খবর বিবিসির।
জি সেভেন সম্মেলনের নাম উল্লেখ না করেই দূতাবাসের এক মুখপাত্র বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন আন্তর্জাতিক যে কোনও সিদ্ধান্ত বিশ্বের গুটিকয়েক দেশ ছোটখাট দল তৈরি করে নিয়ে ফেলত। সে দিন অনেক আগেই চলে গেছে। আমরা বিশ্বাস করি- ছোট বা বড়, শক্তিশালী বা দুর্বল, ধনী কিংবা গরীব বলে আলাদা কিছু নেই। বিশ্বে সবাই সমান। সব দেশকেই সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।’
বেইজিংয়ের ট্রিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বিআরআই’কে (বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনিশিয়েটিভ) দুর্বল করতে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিথ্রিডব্লিউ (বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড) নামের নতুন একটি প্রকল্পে স্বাক্ষর করেছেন জি-সেভেন নেতারা।
নতুন এ প্রকল্পের আওতায় রাস্তাঘাট নির্মাণ ও অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন এগিয়ে নিতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে তহবিল দেওয়া হবে।নতুন ওই চুক্তির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কারবিস বে ডিক্লারেশন’।
এরপর বৈঠকে চীনের মোকাবিলায় ‘বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড’ অর্থাৎ আরও সমৃদ্ধ, আরও উন্নত ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নেতারা।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জি-সেভেন সম্মেলনে করোনা মোকাবেলা, প্রাকৃতিক সুরক্ষার মতো বিষয়গুলোকে ইস্যু করা হলেও নেপথ্যে চীন-বিরোধিতায় ঐকমত্য তৈরি করতেই এ সম্মেলন।
নতুন এই চুক্তিকে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনিশিয়েটিভ’র ক্ষেত্রে বড় চপোটাঘাত হিসেবে দেখছে বেইজিং। ২০১৩ সালে চীন এই বিআরআই প্রকল্প গ্রহণ করে।
লাখ লাখ কোটি ডলারের এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ১০০টির বেশি দেশ যুক্ত হয়েছে। এই বিআরআই প্রকল্পের মধ্যে রেলওয়ে, সড়ক, বন্দর, মহাসড়ক ও অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো রয়েছে।
বিশ্বের ধনী দেশগুলির এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাঁক্রো, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি।
এছাড়া জি-৭ গোষ্ঠীর সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভার্চুয়ালি নিজের বক্তব্য পেশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।