ইউরোপের পশ্চিম প্রান্তে আটলান্টিকের তীর ঘেষে প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত দেশ পর্তুগাল। দেশটি পর্যটন শিল্পের জন্য বিশ্ববাসীর কাছে বেশ আকর্ষণীয়। তবে যতটা না পর্যটন নির্ভর তার চেয়ে বেশি অভিবাসনবান্ধব। এ কারণে পর্তুগালকে অভিবাসীদের স্বর্গরাজ্যও বলা চলে। কিছু শর্ত সাপেক্ষে অতি সহজেই এখানে বৈধতা পাওয়ায় যায় বিধায় প্রতিবছর লাখ লাখ অভিবাসী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে পর্তুগালে। অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রায় চার লাখ মানুষ বর্তমানে পর্তুগালে অবস্থান করছে। করোনা মহামারীর কারণে গত এক বছরে তাদের অভিবাসন বৈধতার প্রক্রিয়াটি থমকে আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশী। তারা দেশটিতে বৈধতা পাওয়া প্রশ্নে এখন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
পর্তুগালের ফরেন বর্ডার সার্ভিস বা সেফ এর তথ্য মতে, বর্তমানে তিন লাখ ৯০ হাজারেরও অধিক অভিবাসী রেসিডেন্ট পারমিটের অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ হাজার অভিবাসী বৈধতার জন্য সেফের ইন্টারভিউয়ের অ্যাপোয়েন্টমেন্ট ম্যানেজ করেছিল। কিন্তু করোনা মহামারীতে ওই অ্যাপোয়েন্টমেন্টগুলো বাতিল হয়ে গেছে। অপর দিকে বাকি তিন লাখ ৫৬ হাজার অভিবাসী কাগজপত্র সেফে জমা দিয়েছে। তারা অপেক্ষায় আছে কাগজপত্র অনুমোদনের। জানা গেছে, সেফে কাগজ জমা দেয়ার পর প্রতিউত্তর পেতে নিয়ম অনুযায়ী নয় মাস থেকে এক বছর সময় লাগে। অবশ্য বাস্তবে আরো বেশি সময় লাগে বলেই সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সেফ থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই কতজন অভিবাসী কাগজ অনুমোদন পাওয়ার পর অ্যাপোয়েন্টমেন্টের জন্য অপেক্ষায় আছে বা কতজন অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নিতে পারেনি।
ধারণা করা হয়, এদের সংখ্যাও কয়েক হাজার হবে। কারণ গত বছর সেপ্টেম্বরে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নেয়া শুরু হওয়ার অল্প দিনের মধ্যেই চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত সকল অ্যাপোয়েন্টমেন্ট বুকট হয়ে যায়। অর্থাৎ এ বছর জুলাই পর্যন্ত আর কোনো অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নেয়া হবে না।
এ মুহূর্তে অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধতা নিয়ে পর্তুগাল সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো ঘোষণা নেই। তবে ২০২০-এর ১৫ অক্টোবরের মধ্যে যারা সেফে কাগজপত্র জমা দিয়েছে তাদেরকে বৈধদের মতোই সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে পর্তুগিজ সরকার। একইসাথে সেফের কাজে গতি বাড়ানোর জন্য সংস্থাটির সংস্কার হয়েছে। এর নাম পরিবর্তন করে কাজের পরিধি কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন থেকে সেফ শুধু ভিসা, রেসিডেন্ট, পাসপোর্ট ও অ্যাসাইলাম ইত্যাদি কাজ তদারকি করবে। সকল ধরনের পুলিশিং কার্যক্রম থেকে সেফকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ম্যাথুস মনে করেন, এর ফলে সেফ নিজস্ব কাজের প্রতি মনোযোগী হবে ও অভিবাসন কাজে গতি আসবে