বেশ কটা ফার্স্ট -এর দেখা মিলল ৯৩তম অস্কারে। সেরা ছবি হয়েছে ‘নোম্যাডল্যান্ড’। এই ছবির পরিচালক ক্লোয়ি ঝাওয়ের হাতে উঠেছে সেরা পরিচালকের অস্কার। সেরা অভিনেত্রীর নাম ঘোষণার সময় চীনা এই পরিচালকের চোখ ভরে উঠল জলে। কারণ, সেরা অভিনেত্রী আর কেউ নন, ৬৩ বছর বয়সী ফ্রান্সিস ম্যাকডোম্যান্ড, যিনি একাই টেনে নিয়ে গেছেন ‘নোম্যাডল্যান্ড’ সিনেমাকে।
অস্কার হাতে ফ্রান্সিস ‘কোট’ করলেন শেক্সপিয়ারের ‘ম্যাকবেথ’ থেকে, ‘আমার কিছু বলার নেই। আমার রয়েছে এক ধারালো তলোয়ার। আর সেটিই আমার বর্ণমালা।’ তারপর বলছেন, ‘আপনারা জানেন, আমাদের সেই ধারালো অস্ত্র কী! সেটি আমাদের কাজ, আমাদের অভিনয়। সেটিই যা বলার বলে। আমার আজ তাই কিছু বলার নেই।’ অবশ্য বলবেন কী, অস্কারকে তো রীতিমতো ডালভাত বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। এটি তাঁর তৃতীয় অস্কার। ‘থ্রি বিলবোর্ড আউটসাইড এবিং, মিজৌরি’ আর ‘ফার্গো’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য তিনি এই পুরস্কার পান।
অন্যদিকে, সেরা অভিনেতার ক্ষেত্রে তো রীতিমতো ইতিহাস গড়েছেন অ্যান্থনি হপকিন্স। বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখিয়েছেন তিনি। ৮৩ বছর বয়সে অস্কার জয় করে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন তিনি। অস্কারের ৯৩ বছরের ইতিহাসে এত ‘বুড়ো’ অভিনেতা আর নেই। তিনিই ইতিহাসের সবচেয়ে বুড়ো অস্কারজয়ী।
হপকিন্সের বাড়িতে আরও একটি অস্কার আছে। ‘দ্য সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্বস’ ছবিতে হলিউডের বড় পর্দায় অমরত্ব পাওয়া ‘হ্যানিবাল লেকচার’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেবার অস্কার জিতেছিলেন তিনি।
এদিকে সেরা সহ-অভিনেত্রীর পুরস্কার হাতে তুললেন ৭৩ বছর বয়সী দক্ষিণ কোরিয়ান অভিনেত্রী ইয়া-জাং উন। ‘মিনারি’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয় করে এই পুরস্কার হাতে তুললেন তিনি। এর মাধ্যমে গড়লেন ইতিহাস। কেননা, এর আগে কোনো দক্ষিণ কোরিয়ান অভিনেত্রী পায়নি অস্কারের স্পর্শ।
অন্যদিকে সেরা সহ-অভিনেতার পুরস্কার হাতে তুলেছেন ব্রিটিশ কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা ড্যানিয়েল কালুইয়া। ‘জুডাস অ্যান্ড দ্য ব্ল্যাক মেসিয়াহ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য এই পুরস্কার ঘরে তোলেন ৩২ বছর বয়সী এই তরুণ অভিনেতা।
এদিকে ‘মা রেইনি’স ব্ল্যাক বটম সিনেমার জন্য মিয়া নীল আর জামিকা উইলসনের হাতে উঠেছে সেরা মেকআপ আর হেয়ার স্টাইলের পুরস্কার। এই প্রথম এই বিভাগে দুই কৃষ্ণাঙ্গ নারীর হাতে উঠল এই পুরস্কার। এদিকে জুডাস অ্যান্ড দ্য ব্ল্যাক মেসিয়াহ সিনেমার ‘ফাইট ফর ইউ’ গানে অস্কার হাতে তুলেছেন ২৩ বছর বয়সী মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ গায়িকা হার।
ফ্রান্সিস ম্যাকডোম্যান্ডকে বাদ দিলে এবারের অস্কারের প্রথম পাঁচটি বিভাগে নেই কোন ‘হোয়াইট মার্কিন’। স্যার ফিলিপ অ্যান্থনি হপকিন্স মূলত ব্রিটিশ-আমেরিকান। তাই পুরোপুরি মার্কিন বলা যাবে না তাঁকে। রয়েছেন দুজন এশীয় নারী, চীনের ক্লোয়ি ঝাও আর দক্ষিণ কোরিয়ান অভিনেত্রী ইয়া-জাং উন। সেরা পাঁচের তিনজন ষাটোর্ধ্ব। তাই অস্কারকে ‘বর্ণবাদী’, ‘মার্কিন’ আর ‘পুরুষতান্ত্রিক’ বলে গাল দেওয়ার দিন ফুরিয়ে আসছে। এবারের অস্কার বৈচিত্র্যের রঙে রঙিন।