২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ইউরোপে প্রবেশ করেছে ১৮ হাজারেরও বেশি শিশু-কিশোর শরণার্থী৷ কিন্তু পরবর্তীতে তাদের সাথে কি ঘটেছে সেটা এক রহস্য৷
ইউরোপে নিখোঁজের পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাতে ক্নার্ক এবং ডি স্ট্যান্ডার্ড এর তথ্য যুক্ত করা হয়েছে৷ তবে ফ্রান্স এবং রোমানিয়ার মত কয়েকটি দেশ থেকে আসা শিশু-কিশোরদের তথ্য জানা না থাকায় নিখোঁজের সংখ্যা অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
এছাড়া কোন দেশ থেকে থেকে শিশু-কিশোররা তাদের দেশে পৌঁছাচ্ছে তার খোঁজ রাখে না ইউরোপের অনেক দেশ৷ তবে নিবন্ধিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে যেসব শিশু-কিশোর নিখোঁজ হয়েছে, তারা মরক্কো, আলজেরিয়া, ইরিত্রিয়া, গিনি এবং আফগানিস্তান থেকে এসেছিলো৷
বেলজিয়ামে আশ্রয় প্রার্থী গ্রহণের কেন্দ্রীয় সংস্থা ফেডাসিল এর তথ্য অনুযায়ী, বেলজিয়ামে গত তিন বছরে ২ হাজার ৬৪২ জন শিশু-কিশোর নিখোঁজ রয়েছে৷ ২০১৮ সালে ৯৮৭, ২০১৯ সালে এক হাজার ৭২ এবং ২০২০ সালে ৫৮৩ জন৷
করোনা মহামারীর কারণে গত বছর সংখ্যাটা কম ছিলো৷ ফেডাসিলের মুখপাত্র লিয়েস গিলিস বলেছেন, ‘‘করোনার কারণে ২০২০ সালে অন্য বছরের তুলনায় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা কম ছিলো৷ এছাড়া নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে তাই নিখোঁজের সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব হচ্ছে না৷’’
গত কয়েক বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের মধ্যে মাত্র ১০টি দেশ তাদের পরিসংখ্যান দিয়েছে৷ এক দেশের সাথে অন্য দেশের নিবন্ধন পদ্ধতির মিল নেই৷ বেলজিয়ামে ফেডাসিল এই বিষয়টি দেখভাল করছে৷ পাশাপাশি আইন মন্ত্রণালয়, পুলিশ এবং আইনজীবী এবং চাইল্ড ফোকাস নামে একটি ফাউন্ডেশন বিষয়টির সাথে জড়িত৷
কিছু ক্ষেত্রে অপ্রাপ্তবয়স্কদের বয়স বাড়িয়ে নিবন্ধন করা হয়৷ এরপর দেশে ঢুকে তারা হাওয়া হয়ে যায়৷ অর্থাৎ তারা কোথায় আছে তার খোঁজ জানা যায় না৷
নিখোঁজ শিশু-কিশোরদের সহায়তার জন্য ইউরোপের যে অ্যাডভোকেসি গ্রুপ রয়েছে, তারা জানিয়েছে, নিখোঁজ শিশুদের বিষয়টি কর্তৃপক্ষ এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তেমন প্রাধান্য দেয় না৷ এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপের পুলিশ সংস্থা ইউরোপোল৷ মানবপাচারকারীরা অভিভাবকহীন শিশু-কিশোরদের অভিবাসনের ব্যাপারে বেশি সক্রিয় বলে জানিয়েছে তারা৷
এই গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে প্রতি চারজন পাচারকরা শিশুর মধ্যে একজন এবং প্রতি ছয়জন অভিভাবকহীন শিশু-কিশোরের মধ্যে একজন নিখোঁজ৷ ইটালিতে ১৩ বছর বয়সি অভিভাবকহীন শিশুদের যৌনকর্মী এবং শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে৷
নিখোঁজ শিশু-কিশোরদের জন্য ইউরোপে টোল ফ্রি হটলাইন চালু আছে৷ নাম্বার ১১৬-০০০৷ ইউরোপের ৩১টি দেশে জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এই নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে৷ শিশু-কিশোর এবং পরিবারগুলো এই হটলাইনে ফোন করে বিনামূল্যে এবং তাৎক্ষণিকভাবে মানসিক, সামাজিক, আইনি এবং প্রশাসনিক সবধরনের সহায়তা পাবেন ২৪ ঘণ্টা৷