12.6 C
Düsseldorf

জার্মান শোষণের প্রতিবাদকারী এক রাজা

Must read

গোলজার হোসাইন খান
গোলজার হোসাইন খান
আমি সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর একজন অবসরপ্রাপ্ত এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার।অতি সাধারণ মানুষ। কোন উচ্চাভিলাষ নেই। সাংসারিক বোধবুদ্ধি শূন্যের কোঠায়। হেরে যাওয়া মানুষের পাশে থাকি।এড়িয়ে চলি স্বার্থপরতা।বিনম্র শ্রদ্ধায় নত হই সৃষ্টিশীল-পরিশ্রমী মানুষের প্রতি আর ভালবাসি আমার পেশাকে।

রাজার ঘরে জন্ম, জার্মানিতে পড়ালেখা, রাজা রুডলফ দৌয়ালা মাঙ্গা বেল জার্মান সংস্কৃতির অনুরাগী ছিলেন৷ কিন্তু জার্মান উপনিবেশের সময় যখন তার জনগণ অত্যাচারিত হতে লাগলো, তখন রুখে দাঁড়ালেন তিনি৷ শেষ পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলতে হয় তাকে৷

রুডলফ দৌয়ালা মাঙ্গা বেল কে?
১৮৭৩ সালে দৌয়ালায় জন্ম তার৷ তিনি রাজা এনদুম্বে লোবে বেলের নাতি, যিনি রাজা বেল নামে সুপরিচিত ছিলেন৷ ১৮৮৪ সালে জার্মান সাম্রাজ্যের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন তিনি৷ পড়ালেখার জন্য রুডলফ দৌয়ালা জার্মানিতে গিয়েছিলেন৷ পরে বাবাকে সাহায্য করতে ক্যামেরুনে ফিরে আসেন এবং ১৯০৮ সালের ২রা সেপ্টেম্বর রাজা হন৷

রুডলফ দৌয়ালা কেনো জার্মান ঔপনিবেশিক শাসনের বিরোধিতা করেছিলেন?
জার্মান আইন সম্পর্কে জানতে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়েছিলেন রুডলফ৷ সেই সুবাদে জার্মানির ঔপনিবেশিক প্রশাসনে কাজ করার সুযোগ হয়েছিলো তার৷ এরপরই জার্মান শাসনের বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাব জন্মায় তার৷ তিনি দেখলেন, জার্মানরা নিজেদের তৈরি আইন লঙ্ঘন করছে৷ দুই বছর রাজত্বের পর দৌয়ালার অনুসারীরা তার নেতৃত্বে জার্মান ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন৷ রুডলফের বক্তব্য ছিলো, জার্মানরা অবৈধভাবে তাদের জমি দখল করছে, যা তার দাদার সাথে হওয়া চুক্তির লঙ্ঘন৷

দৌয়ালাতে সেসময় একটি শহর ছিলো যেখানে ইউরোপীয়রা থাকতো আর অন্য একটি শহরে থাকতো কৃষ্ণাঙ্গরা৷ জার্মানরা কৃষ্ণাঙ্গদের দূরে রাখতে চাইতো, তাদের অভিযোগ, কৃষ্ণাঙ্গরা ম্যালেরিয়া ছড়ায়৷

কীভাবে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রুডলফ?
রুডলফ প্রথমে জার্মানিতে আন্দোলন শুরু করলেন, যেখানে তাকে বিদ্রোহী বলে ডাকা শুরু হল৷ যেহেতু তিনি জার্মানির স্কুল আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছিলেন, তাই আইনি পথেই লড়াইটা শুরু করেছিলেন তিনি৷ যখন তিনি দেখলেন কোন কৌশলই খাটছে না, তখন দৌয়ালাতে আন্দোলন শুরুর সিদ্ধান্ত নিলেন

কীভাবে মারা গেলেন রুডলফ?
১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে জার্মানরা তাদের বিদ্রোহীদের দমনের সিদ্ধান্ত নিলো৷ জার্মান প্রশাসন রুডলফ দৌয়ালার বিচার করলো এবং সে বছরের ৭ই আগস্ট তাকে গ্রেপ্তার করা হলো৷ বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো৷ সেই রাতেই কর্নেল সিমারমান তাকে শৃঙ্খলমুক্ত করে তার রানী ও যুবরাজদের কাছ থেকে বিদায় নিতে বললেন৷ চাইলে তিনি পালাতে পারতেন৷ কিন্তু তিনি পরের দিন জার্মান সেনাদের কাছে যান৷ ৮ই আগস্ট তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়৷ তার শেষ কথা ছিলো: ‘‘তোমরা নিষ্পাপ একজন মানুষকে ফাঁসি দিচ্ছো৷ অকারণে আমাকে হত্যা করছো৷ এর ফলাফল হবে ভয়াবহ৷”

ক্যামেরুনের মানুষ কীভাবে তাকে স্মরণ করছে?
জার্মান ঔপনিবেশিক প্রভুদের বিরোধিতা করার জন্য ক্যামেরুনের মানুষ রুডলফ দৌয়ালা মাঙ্গা বেলকে একজন শহীদ ও বীরের মর্যাদা দিয়েছে৷ কয়েকজন ইতিহাসবিদের মতে, দৌয়ালা মাঙ্গার বিদ্রোহের কারণেই ক্যামেরুন স্বাধীন হয়েছে৷
এপিবি

- Advertisement -spot_img

More articles

মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে অনুগ্রহ করে আপনার নাম লিখুন

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ আপডেট