২১ জুন বিশ্ব সঙ্গীত দিবস। এ দিনটি সঙ্গীতকে নতুন করে উপলব্ধি করার লগ্ন। মানুষের মনে-মননে, স্বপ্নে-কল্পনায় সঙ্গীত যে বিশাল ভূমিকা পালন করে সেটাই অনুভবের দিন এটি। সঙ্গীতের ভাষা শ্বাশত। কবি যে বলেছেন, সুরের দেশভাগ হয় না, তা আক্ষরিক অর্থেই সত্য। না হলে পাশ্চাত্য কখনও পূর্বের সুর-রাগ-তাল-লয়ে আকৃষ্ট হত না, আর পূর্বও কখনও কনচের্তো বা অপেরায় মুগ্ধ হত না। তৈরি হত না সুরের সম্পর্ক।
সঙ্গীতের সেই বিশ্ব-সম্পর্ককে নতুন করে মনে করতেই যেন ২১ জুনের এই বিশ্ব সঙ্গীত দিবসের উদযাপন। ১৯৭৬ সালে ফ্রান্সের রেডিও স্টেশনের আমেরিকান মিউজিশিয়ান জোয়েল কোহেন প্রথম একটি বিশ্ব সঙ্গীত দিবসের প্রস্তাব করেন। তার পর কেটে যায় ১ দশক। ১৯৮৫ সালে ২১ জুন দিনটিতে ইউরোপে প্রথম পালিত হয়। এর পর থেকে সারা বিশ্বেই ২১ জুনে বিশ্ব সঙ্গীত দিবস পালন করা শুরু হয়।
তবে সারা বিশ্বে মিউজিক ডে প্রথম পালিত হয় ফ্রান্সে, ১৯৮২ সালে, ‘Fête de la Musique’ নামে। এ দিনটি নানা রকম সঙ্গীতের মাধ্যমে ফ্রান্সের পাবে, রেস্তোরাঁয়, শহরের পথে উদযাপিত হয়ে আসছে।
মানব হৃদয়ের গভীরতম আবেগ প্রকাশের ভাষাই হল সঙ্গীত। গান বা মিউজিক বিভিন্ন উপলক্ষ্যে তৈরি হয়ে ওঠে। কখনও কোনও উত্সব উপলক্ষে, কখনও অবসরযাপনের উদ্দেশ্যে, কখনও আবার শিল্পীমনের বেদনা প্রকাশ করতে গিয়ে তৈরি হয় সঙ্গীত। তবে যে ভাবে এবং যেদিকে লক্ষ্য রেখেই কোনও গান তৈরি হয়ে উঠুক না কেন, তা সব সময়ই মনকে আনন্দে স্নিগ্ধ করে। স্বয়ং উইলিয়াম শেকসপিয়ার বলেছেন, যদি প্রেমের খাদ্য হয় সঙ্গীত তবে বাজাও তা।
সঙ্গীত সব কিছুতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে, কল্পনার উড়ানে সহায়তা করে, মনে পাখা গজিয়ে দেয়। বলেছিলেন প্লেটো। আর ফ্রেডরিখ নিটশে, যিনি চরম নিরীশ্বরবাদী ছিলেন তিনি পর্যন্ত সঙ্গীতের মাধুর্যে মগ্ন ছিলেন। বলেছিলেন,সঙ্গীত বিহনে থাকে শুধু ভুলে ভরা জীবন।