গল্প নয় সত্যি, একজন শাহাবুদ্দিন মিয়া

১৯৫৬ সালে বাংলাদেশের মাদারীপুরের বাজিতপুরে জন্মগ্রহণ করেন জনাব শাহাব উদ্দিন মিয়া। ঢাকা তিতুমীর কলেজ থেকে অনার্স শেষ করে ৪১ বছর আগে ১৯৭৯ সালে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান জার্মানিতে। ডর্টমুন্ড ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স শেষে কর্মজীবন শুরু করেন। কিন্তু চলার পথ অতটা মসৃণ ছিল না। আত্মবিশ্বাস আর কঠোর অধ্যাবসায় তাকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে যায়।বর্তমানে তিনি জার্মানির রাজনৈতিক দল গ্রিন পার্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং আসন্ন ফেডারেল পার্লামেন্ট নির্বাচনের একজন প্রার্থী।

ব্যক্তি জীবনে তিনি চার সন্তানের জনক। অনুবাদ সংস্থা ‘মিয়া’র স্বত্বাধিকারী। ২০১২ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ওয়ার্লের মুখপাত্র। ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ইন্টিগ্রেশন কাউন্সিল (বিল্ডিং এবং স্কুল কমিটির) সদস্য। ২০২০ সাল থেকে জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত জার্মান জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। শাহাবুদ্দিন মিয়াই জার্মান সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করা প্রথম বাংলাদেশি।

তিনি মনে করেন যে প্রশস্ত হৃদয়, শক্তি এবং মন দিয়ে অনেক কিছুই অর্জন করা সম্ভব।এবং এগুলি তার জীবন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে।

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি বিস্ফোরণের পর থেকেই তিনি সবুজায়নের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ হন। মানব সৃষ্ট জলবায়ু বিপর্যয় এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটি টেকসই নীতিমালার অপরিহার্যতা উপলব্ধি করে এর পক্ষে অগ্রনী ভূমিকা পালন করছেন।

তার মতে পারমাণবিক ও কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলি অবশ্যই অতীতের বিষয় হতে হবে। তিনি মনে করেন সৌর শক্তির বাধ্যতামূলক ব্যবহারের মাধ্যমে শিল্প ও বাণিজ্য কে রূপান্তর করে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্য অর্জন করাই এখন সময়ের চাহিদা।এগুলি পরিপালনের সমস্ত প্রযুক্তি ও সামর্থ্য জার্মানির রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খরা, জলোচ্ছ্বাস এবং গ্রীন হাউস ইফেক্ট দেশ ও বিদেশে বহু মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে ফেলেছে যা আগামী বছরগুলোতে শরণার্থীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়াবে।

এই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ কেবলমাত্র শান্তিপূর্ণ এবং সম্মিলিত ভাবে সমাধান করা যেতে পারে। বিচ্ছিন্নতা এবং বর্জন কোন বিকল্প হতে পারে না।

তিনি বলেন,”আমি বাংলাদেশের একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের চাক্ষুষ সাক্ষী। তাই আমি জানি যে যুদ্ধ কখনোই সমাধান হতে পারে না।অস্ত্র রপ্তানির পরিবর্তে আমাদের দেশ গুলিকে স্বাধীনভাবে পরিচালনায় সহায়তা করতে হবে। আমি আমার অভিজ্ঞতাকে প্রথম প্রজন্মের অভিবাসী হিসেবে অভিবাসনকে আরও উন্নত করতে ব্যবহার করতে চাই।

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়া দেশটির সাথে সংযোগ যাতে বিচ্ছিন্ন না হয় তার জন্য দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি অবশ্যই সম্ভব করে তুলতে হবে।” এছাড়াও তিনি একত্রীকরণ,জলবায়ু সুরক্ষা এবং শান্তির জন্য সবাইকে অংশগ্রহণমূলক কাজে আত্মনিয়োগের উদাত্ত আহ্বান জানান।

- Advertisement -

মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে অনুগ্রহ করে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version