কৃষ্ণসাগরে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছের উপকূলে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজকে সতর্কতামূলক গুলি ছুড়ে হুঁশিয়ার করা এবং যাত্রাপথে বোমা ছুড়ে সেটিকে তাড়া করার কথা জানিয়েছে রাশিয়া।
বুধবার মস্কোর প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় জানায়, ব্রিটিশ রয়াল নেভির ‘এইচএমএস ডিফেন্ডার’ জাহাজ ক্রিমিয়ার কাছাকাছি রুশ জলসীমায় ঢুকে পড়েছিল। তখনই একটি টহল জাহাজ থেকে সেটির যাত্রাপথে বোমা ছোড়া হয় এবং গুলি ছুড়ে হুঁশিয়ার করা হয়।
তবে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় রাশিয়ার এমন দাবি অস্বীকার করেছে। গুলি-বোমা ছোড়ার কোনও ঘটনাই ঘটেনি বলে জানিয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ মন্ত্রণালয় বলেছে, “যুদ্ধজাহাজটি আন্তর্জাতিক আইন মেনে ইউক্রেইনের জলসীমা দিয়ে নির্বিবাদে পথ পার হচ্ছিল মাত্র।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মুখপাত্রও বলেছেন, “যুদ্ধজাহাজটি রাশিয়ার জলসীমায় ছিল কিংবা সেটিকে হুঁশিয়ার করতে গুলি ছোড়া হয়েছে এমন কথা বলাটা ঠিক নয়।”
কিন্তু রাশিয়া বলছে, ক্রিমিয়ার দক্ষিণে কেপ ফায়োলেন্টের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলোকে দেওয়া রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সতর্কতামূলক গুলির পর এইচএমএস ডিফেন্ডার গতিপথ পরিবর্তন করেছে।
যুদ্ধজাহাজের গতিবিধি বিপজ্জনক ছিল উল্লেখ করে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় একে জাতিসংঘের সমুদ্র বিষয়ক কনভেনশনের লঙ্ঘন বলে অভিযোগ করেছে। এ ঘটনার পর রাশিয়ায় নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করেছে এবং তখন থেকেই এই উপদ্বীপের উপকূলের চারপাশের জলসীমাকে রাশিয়া তাদের আওতাধীনেই ধরে নিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনও রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং পশ্চিমা দেশগুলো এই উপদ্বীপকে ইউক্রেইনের অংশ হিসাবে দেখে। সে কারণেই এর আশেপাশের জলসীমা রাশিয়ার বলে মানে না তারা।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধজাহাজের ঘটনাটি নিয়ে রাশিয়া এবং যুক্তরাজ্য যা যা বলেছে সে সব সত্য না হয়ে থাকলেও ঘটনাটি বিতর্কিত সমুদ্রসীমায় পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাত বাড়ারই নমুনা।