গোলাবারুদ নয়, সেনাবাহিনীও নয়, ভবিষ্যতে যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারিত হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) জোরে। এআই-শক্তিতে যে যতটা বলবান, যুদ্ধে জয়ের পাল্লা তার দিকে ততটা ভারী থাকবে। এ কারণে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো ইতোমধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় শুরু করেছে।
সাম্প্রতিক নাগোরনো-কারাবাখ যুদ্ধেও ব্যবহৃত হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এতে এআই ব্যবহার করে ড্রোনের সাহায্যে আর্মেনিয়ায় বোমা ফেলেছে আজারবাইজান। আর সেই যুদ্ধের ফলাফল তো সবারই জানা। আজারিদের কাছে নতস্বীকার করে ভূমির দখল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে আর্মেনীয়রা।
এ ধরনের রণকৌশলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাহায্যে ড্রোনকে প্রোগ্রাম করে দেওয়া হয়। ড্রোনটি বোমা নিয়ে আকাশে ঘুরতে থাকে এবং কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যবস্তু পেলেই তার ওপর বোমাবর্ষণ করে।
জাতিসংঘের সাবেক যুদ্ধবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আমনদীপ সিংয়ের মতে, যুদ্ধক্ষেত্রের সংজ্ঞা অচিরেই বদলে যাবে। লড়াইয়ের সময় সামরিক-বেসামরিক মানুষের মধ্যে যে বিভাজন তৈরি করা হয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুদ্ধে সেটি আর থাকবে না।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কথা বলা হয়েছে। বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো এআই শক্তিতে কীভাবে নিজেদের তৈরি করছে, সেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
সম্প্রতি চীনের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ খাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে দেশটি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও ২০১৭ সাল থেকে এআই গবেষণায় বিপুল অর্থ খরচ করছেন।
সাম্প্রতিক একটি তথ্যচিত্রে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস যুদ্ধক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। তার মতে, শুধু আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ওপর ভর করেই ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলো পরিচালিত হবে।
জার্মান মন্ত্রীর শঙ্কা, শক্তিধর দেশগুলো যেভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে যুদ্ধের গবেষণায় ব্যবহার করছে, তাতে খুব শিগগিরই শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হবে এবং যুদ্ধের আবহ তৈরি হবে।
-ডয়েচে ভেলে