কথায় বলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে সেই ঘটনাই ঘটল। ১৯৪১ সালের স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সই করলেন আটলান্টিক চার্টার। বিশ্বযুদ্ধকালে যা প্রথম সই করেছিলেন চার্চিল এবং রুসভেল্ট।
বৃহস্পতিবারই যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন বাইডেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে এটাই তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। শুক্রবার থেকে যুক্তরাজ্যে শুরু হচ্ছে জি সেভেন সামিট। তার আগে বৃহস্পতিবারই জনসন এবং বাইডেন প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক করেন কর্নওয়ালে। বৈঠক শেষে দুই রাষ্ট্রপ্রধানই জানিয়েছেন, ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আটলান্টিক চার্টার সই করার পাশাপাশি রাশিয়া, চীন নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে জি সেভেনে আলোচনা করতে চান বাইডেন। ট্রান্স আটলান্টিক পলিসি, রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সমঝোতা এবং চীন নিয়ে ঐক্যমত্য। এছাড়াও করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বের গণতান্ত্রিক ভারসাম্য নিয়েও জি সেভেনে আলোচনা হওয়ার কথা।
বস্তুত, বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশগুলিকে এবারের জি সেভেনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জনসন। তার মধ্যে ইউরোপের দেশগুলির পাশাপাশি ভারতও আছে। করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বে গণতন্ত্র কী ভাবে সুরক্ষিত থাকবে, গণতান্ত্রিক ভাবে কী ভাবে মানুষকে ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেওয়া যাবে, এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।
বৃহস্পতিবার জনসন এবং বাইডেন যে আটলান্টিক চার্টার সই করেছেন, সেখানে অবশ্য রাশিয়া এবং চীনের প্রতি তাদের মনোভাব নিয়ে নীতি তৈরি করা হয়েছে। অামেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার দীর্ঘদিন ধরেই ঠান্ডা-গরম সম্পর্ক। পুটিনের একনায়ক মনোভাব অ্যামেরিকা পছন্দ করে না। বাইডেন চাইছেন, ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে সমঝোতায় এসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শক্তি গড়ে তুলতে। চীনের ক্ষেত্রেও একই নীতি নিতে চাইছেন তিনি।
কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রাশিয়ার ক্ষেত্রে ঐক্যমত্য সম্ভব হলেও, চীনের বিরুদ্ধে তা গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। জার্মানি এবং ফ্রান্স চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে সায় দিয়েছে। বাজারের কথা মাথায় রেখে তারা এমন কিছু করবে না, যাতে চীন বেঁকে বসে।
জি সেভেনের পর ন্যাটো এবং ইইউ-ইউএস সামিটে যাওয়ার কথা বাইডেনের। তারই মধ্যে আগামী বুধবার পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে পারে তার। বৈঠক হতে পারে ম্যার্কেল এবং যুক্তরাজ্যের রানির সঙ্গেও।
-রয়টার্স