অতিরিক্ত ছুটির প্রয়োজনে তাইওয়ানের এক ব্যাঙ্ককর্মী যা কাণ্ড ঘটালেন, তা দেখে ও শুনে তাজ্জব গোটা দুনিয়া।
কী সেই কাণ্ড? সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে তিনবার ডিভোর্স দিয়ে চারবার বিয়ে করলেন ওই ব্যাঙ্ককর্মী! তাও আবার ৩৭ দিনের মধ্যে। উদ্দেশ্য একটাই, ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে যাওয়া। নেটবিশ্বে তাঁর এই কীর্তি ছড়িয়ে পড়তে বিস্ময়প্রকাশ করেছেন অনেকেই। ওই ব্যক্তির নাম অবশ্য জানা যায়নি। তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেই শহরের একটি ব্যাঙ্কের ক্লার্ক তিনি। ছুটির পাশাপাশি স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ আর বিচ্ছেদের খেলায় নেমে ব্যাঙ্কের থেকে তিনি বেশ কিছু অর্থও কামিয়ে নিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গত বছরের ৭ এপ্রিল ব্যাঙ্কের ওই কেরানি প্রথমবার বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের জন্য তাঁকে আটদিনের সবেতন ছুটি মঞ্জুর করেছিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, বিবাহ থেকে মধুচন্দ্রিমা, সব মিলিয়ে তাঁর ছুটির প্রয়োজন ছিল প্রায় এক মাসের। ‘বিয়ে করলে ছুটি মিলবে’—এই আইনের আওতায় স্ত্রী’কে সাতদিন অন্তর ডিভোর্স দিয়েছেন তিনবার। আবারও বিয়ে করে ছুটির আবেদন করেছেন। প্রথমবার বিবাহের আটদিনের ছুটি শেষ হতেই স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন তিনি। পরের দিনই বিচ্ছেদ হওয়া স্ত্রীকেই ফের বিয়ে করেন। একইভাবে চারবার। আর প্রত্যেকবারই ৮ দিনের সবেতন ছুটির আবেদন করেছিলেন তিনি। তবে, ব্যাঙ্ককর্মীর এই চালাকি ধরে ফেলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি আটদিনের পর তাঁর অতিরিক্ত ছুটির আবেদনগুলি খারিজ করে দেয়। ফলে ৩২ দিনের ছুটি কাটিয়ে এসে মাত্র আটদিনের বেতন পেয়েছিলেন তিনি।
হাল ছাড়েননি ওই ব্যাঙ্ককর্মী। তাইপেই সিটির লেবার ব্যুরোতে গিয়ে তিনি ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করেন। তিনি সাফ জানান, তাইওয়ানের শ্রম আইন অনুযায়ী, কোনও কর্মচারী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর আটদিনের সবেতন ছুটির পেতে পারেন। তাই চারবার বিবাহের জন্য তাঁর ৩২ দিনের ছুটি পাওয়া উচিত।
এই মামলায় জয় হয়েছে ওই তরুণ ব্যাঙ্ককর্মীর। লেবার কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা অর্থাৎ ব্যাঙ্ক শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছে। পাশাপাশি ব্যাঙ্ককে ৭০০ ডলার জরিমানাও করেছে। হার মানতে নারাজ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেছিল তারা। ব্যাঙ্কের বক্তব্য ছিল, তাদের ওই কর্মচারী শ্রম আইনে বিবাহের ছুটির যে ধারা রয়েছে, সেই ধারার অপব্যবহার করছেন। অবৈধভাবে অতিরিক্ত ছুটি নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। সম্প্রতি, লেবার ব্যুরো তাদের পূর্বের রায়ই বহাল রেখেছে। তবে ব্যাঙ্কের ওই কর্মীর আচরণ অনৈতিক বলে জানিয়েছে আদালত।