‘জেমস বন্ড, মিট জেফ বেজোস।’
সিএনএনের প্রতিবেদনের শুরুটা এমন যেন জেমস বন্ডকে আমাজনের জেফ বেজোসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অবশ্য ব্যাপার কিছুটা তা-ই।
ই-কমার্স সেবাদাতা আমাজন বুধবার হলিউডের বিখ্যাত সিনেমা স্টুডিও মেট্রো গোল্ডউইন মেয়ার কিনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আর এই স্টুডিওটিই জেমস বন্ড সিরিজের চলচ্চিত্রগুলো মুক্তি দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, এরপর আমাজনের ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা প্রাইম ভিডিওতে যুক্ত হবে জেমস বন্ডসহ এমজিএমের অন্যান্য সিনেমা এবং টিভি অনুষ্ঠান।
অর্থাৎ কেবল ই-কমার্সের মাধ্যমে হাজারও পণ্য নয়, প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে এগিয়ে থাকতে এবার ভিডিও স্ট্রিমিং সেবায় জেমস বন্ডকেও বেচবেন আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস।
এমজিএম কেনার জন্য খরচ হবে ৮৪৫ কোটি ডলার। তবে এর বিনিময়ে সুবিধাও কম পাচ্ছে না আমাজন। এমজিএমের চার হাজারের বেশি সিনেমা এবং ১৭ হাজারের বেশি টিভি অনুষ্ঠান প্রাইমে যোগ করার সুযোগ পাবে তারা। আর সেগুলোই এই চুক্তির ‘আসল আর্থিক মূল্য’ বলে জানিয়েছেন প্রাইম ভিডিও এবং আমাজন স্টুডিওর প্রধান মাইক হপকিন্স। এমজিএমের কর্মীদের সঙ্গে এই সংখ্যাগুলো আরও বাড়াতে কাজ করবেন তিনি।
অবশ্য চুক্তি চূড়ান্ত হতে আইনকানুনের ব্যাপার আছে। অনুমোদন না পেলে যেকোনো সময় তা বাতিলও হতে পারে বলে জানিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠানই।
আমাজনের বিশাল সাম্রাজ্যের ক্ষুদ্র একটি অংশ এর ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা। তবে ইদানীং এই খাতে মনোযোগ বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। দেরিতে হলেও মৌলিক চলচ্চিত্র এবং টিভি সিরিজ তৈরিতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে।
আমাজনের এরই মধ্যে ২০ কোটির বেশি ‘প্রাইম’ গ্রাহক আছে। নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে অন্যান্য সুবিধার সঙ্গে এই গ্রাহকদের দ্রুত পণ্য পৌঁছে দেয় আমাজন। আর আমাজনের প্রাইম কর্মসূচির অংশ এই প্রাইম ভিডিও। সুতরাং প্রাইম ভিডিওকে নির্দ্বিধায় নেটফ্লিক্সের প্রতিদ্বন্দ্বী বলা যায়। নেটফ্লিক্সের গ্রাহকসংখ্যা বর্তমানে ২০ কোটি ৮০ লাখ।
অনেকে মনে করছেন, এমজিএমের যত সিনেমাই থাকুক, আমাজনের আগ্রহের মূলে আছে জেমস বন্ড।
জেমস বন্ড সিরিজের একাংশের স্বত্ব এমজিএমের, সঙ্গে আছে ইয়ন প্রোডাকশনস। করোনা অতিমারির কারণে বেশ কয়েকবার পেছানোর পর বন্ড সিরিজের নতুন সিনেমা ‘নো টাইম টু ডাই’ মুক্তি পাওয়ার কথা আছে আগামী অক্টোবরে।
বক্স অফিসে বরাবরই আধিপত্য বিস্তার করেছে বন্ড সিরিজের সিনেমাগুলো। মূল চরিত্র জিরো জিরো সেভেনকে বিশ্বের সব প্রান্তে ‘লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড’ মানা হয়। এখন প্রাইম ভিডিও যদি জেমস বন্ডের নতুন ঠিকানা হয়, তবে সেটি নিঃসন্দেহে প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে একধাপ এগিয়ে থাকবে।