বাবা,
বিশ্বাস করো-তোমার অনুমিত ধারণায়
যতোটা অপদার্থ ভেবেছিলে-
আমি অতটা মন্দ ছিলাম না।
অনিশ্চিত আগামীর আতংকে –
আমার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় তোমার মত
কষ্ট কম পাইনি আমিও।
পান্তার পানিতে কতদিন মিশে গেছে নোনাজল –
কাউকে বুঝতে দেইনি।
ঘরে ভাতের খোঁটা – বাইরে শিক্ষার অপবাদ,
জীবনটা দুঃসহ হয়ে উঠেছিল বাবা।
তাই কিছু টাকা চেয়েছিলাম –
নিজের মত করে বাঁচবো বলে।
তুমি বিশ্বাস করোনি।
তোমারই বা দোষ কি।
শিক্ষার মতো আর কোন অর্থ জলে ফেলতে চাওনি।
তোমার-আমার আস্থার সংকটে-
মিথ্যে আশার আলো জ্বালিয়ে দিল
মানুষ রূপি এক আদমের ব্যাপারী।
বিলাসী জীবনের স্বপ্নে –
জমিজিরাত, গরুছাগল –
এমনকি মায়ের নাক ফুলটাও বেচে দিয়ে
তুমি সর্বস্ব তুলে দিলে তার হাতে।
তুমি বুঝতে পারনি বাবা
একইসাথে তুলে দিয়েছিলে আমার প্রানটাও।
তাই যখন লিবিয়ার শুষ্ক মরু
ভিজে যায় আমার তাজা রক্তে-
ভূমধ্যসাগরে ভেসে যায় আমার লাশ-
কিংবা আমার কংকাল উঠে আসে –
থাইল্যান্ডের গহীন অরন্যে-
তুমি কান পেতে শুনো বাবা,
শেষবারের মতো আমি তোমাকেই ডেকেছিলাম।
শান্তনা একটাই-
আর কিছুই চাইবো না কোনদিন।
তোমার এ-ই নষ্ট ছেলের দাফনের জন্য –
আর নষ্ট হয়নি তোমার এক টুকরো জমিন।
ভালো থেকো বাবা
আর
পারলে ক্ষমা করো।
একটি পত্রের খসড়া
