10.2 C
Düsseldorf

আর ডেকোনা সেই মধু নামে। যাবারও লগনে কিশোরও বেলায়, যে নামে ডাকিতে

Must read

গোলজার হোসাইন খান
গোলজার হোসাইন খান
আমি সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর একজন অবসরপ্রাপ্ত এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার।অতি সাধারণ মানুষ। কোন উচ্চাভিলাষ নেই। সাংসারিক বোধবুদ্ধি শূন্যের কোঠায়। হেরে যাওয়া মানুষের পাশে থাকি।এড়িয়ে চলি স্বার্থপরতা।বিনম্র শ্রদ্ধায় নত হই সৃষ্টিশীল-পরিশ্রমী মানুষের প্রতি আর ভালবাসি আমার পেশাকে।

শনিবার প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্যে যাবতীয় আচার-অনুষ্ঠান হয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গানটাই যেন অনুরণিত হচ্ছিল। যখন এলাকা প্রায় জনশূন্য, তখনই খুঁজে পাওয়া গেল স্মৃতিগন্ধমাখা ছোট্ট একটা চিঠি। প্রেরক তাঁর প্রেয়সী ‘লিলিবেট’। না, অন্য কোনও প্রেমিকা নন, লিলিবেট নামেই ফিলিপ নিজের জীবনসঙ্গিনীকে ডেকেছেন ৭৩ বছর ধরে। রানি এলিজাবেথের ছোটবেলার ডাকনাম লিলিবেট। ব্রিটিশ রাজপরিবারে একমাত্র ফিলিপকে ছুঁয়েই নামটা রয়ে গিয়েছিল। এবার তারও ইতি। তাই বিদায়বেলায় ‘লিলিবেট’ হয়েই ভিড়ের মাঝে অন্তরের কথাগুলো রেখে গেলেন রানি।

গত ৯ এপ্রিল প্রয়াত হন ব্রিটিশ রাজপরিবারের যুবরাজ ফিলিপ। শতবর্ষ থেকে একটি বছরের কম দূরত্ব রেখেই বিদায় নেন প্রিন্স। শনিবার রীতি মেনে হল শেষকৃত্য। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় এখন টালমাটাল ব্রিটেন। তাই যুবরাজের অন্তিম শ্রদ্ধায় লোকসমাগম নিয়ন্ত্রিত ছিল।যতই তিনি রাজপরিবারের প্রিয় সদস্য হোন না কেন শনিবার উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে ঘরোয়া অনুষ্ঠানেই তাঁর বিদায়পর্ব সমাপ্ত হয়েছে। শামিল ছিলেন খুব বেশি হলে জনা তিরিশেক মানুষ। পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য হাজির থাকলেও ছিলেন না পরিবারের কনিষ্ঠ যুবরানি মেগান মর্কেল। তিনি ফ্লোরিডার বাড়ি থেকে ভিডিও কনফারেন্সে দেখেছেন শেষকৃত্য।

এদিন যুবরাজ ফিলিপের কফিনটি সুন্দর করে সাজিয়ে দেন রানি নিজে। এই বিদায়ও তো এক উদযাপন। শোকের উদযাপন, তাই শোকের সজ্জা। সাদা মখমলে কাপড়ে মোড়া কফিন। উপরে সাদা লিলি, গোলাপ, ফ্রিসিয়া। সব ফুল তাঁর পছন্দের। এভাবে যে কখনও সঙ্গীকে সাজিয়ে তুলতে হবে, কখনও কি ভেবেছিলেন সম্রাজ্ঞী? ভাবেননি। জনসমাগম যতই কম হোক, তবু তো ভিড়। এই ভিড়ের মাঝে তো মনের কথা বলা যায় না। এতদিন তো জনতার মাঝেও একান্ত একটা নিজস্ব যাপন ছিল তাঁদের। শেষবেলায় কেন তবে ভিড়ে হারিয়ে যাবে প্রিয়তমের প্রতি উচ্চারিত শেষ কথাগুলো? তাই তো সাদা কাগজের উপর গুটি কয়েক শব্দে নিজের কথা বলে গেলেন রানি। কফিনের কোনঘেঁষে সেই ছোট্ট কাগজটা সকলের চোখে পড়ল সবার শেষে। বোঝা গেল কয়েকটা শব্দ শুধু – In Loving memory… Lilibet. কাগজে ব্রিটিশ রাজপরিবারের স্ট্যাম্প।

খোঁজখবর করে আসল বিষয়টা জানতে বেশ বেগ পেতে হল। কে এই লিলিবেট? তবে কি ৭৩ বছরের দাম্পত্যের আড়ালে ছিলেন অন্য কোনও নারী?

অন্য নারীই বটে। যুবরাজের একান্ত যুব’রানি’ – কৈশোর, যৌবনের আদরের লিলিবেট। যিনি রানি নন, নন জনগণের কৌতূহলের কেন্দ্রে থাকা কোনও নারী। রানি এলিজাবেথের ছোটবেলার ডাকনাম এই লিলিবেট। বিয়ের পর থেকে ৭৩ বছর এই নামেই স্ত্রীকে ডেকেছেন প্রিন্স ফিলিপ। আজ তাঁর না থাকার সঙ্গে সঙ্গে মুত্যুর মহাসাগরে বিলীন হয়ে গেল নামটুকু – লিলিবেট। জাঁকজমক, রাজপরিবারের ঐতিহ্য – সব কিছুর মাঝে যেন প্রিন্স ফিলিপের অন্তিমের যাত্রা স্মরণীয় হয়ে রইল তাঁর প্রিয় ‘লিলিবেট’-এর লিখে যাওয়ায় স্মৃতিকথায়।

- Advertisement -spot_img

More articles

মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে অনুগ্রহ করে আপনার নাম লিখুন

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ আপডেট