জেফ বেজোস কেবল আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা নন। তাঁর রকেট ইঞ্জিন তৈরির প্রতিষ্ঠান ব্লু অরিজিন আগামী মাসে মানুষ নিয়ে প্রথমবারের মতো মহাকাশে অভিযান চালাবে। প্রথম সে যাত্রায়ই মহাকাশে যেতে চান বেজোস। সে সময় সঙ্গে থাকবেন তাঁর ছোট ভাই মার্ক বেজোস। পাশাপাশি রকেটের একটি আসন নিলামে তোলা হয়েছে।
১৪৩টি দেশ থেকে ৬ হাজার মানুষ সে আসনের জন্য নিলামে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্লু অরিজিন। দর উঠেছে ৩০ লাখ ডলার পর্যন্ত।
অ্যাপোলো ১১ চন্দ্রাভিযানের ৫২তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আগামী ২০ জুলাই মহাকাশের উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করবে নিউ শেপার্ড। সংক্ষিপ্ত যাত্রায় রকেটটি মোট ছয়জন নভোচারী বহন করবে।
ব্লু অরিজিনের পর্যটন রকেটের নামকরণ হয় অ্যালান শেপার্ডের নামানুসারে। তিনি ১৯৬১ সালে মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে প্রথম মহাকাশ ভ্রমণ করেন। এ পর্যন্ত ১৫ বার পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করেছে নিউ শেপার্ড। একটিতেও অবশ্য যাত্রী ছিল না।
ইনস্টাগ্রামে অভিযানের ঘোষণা দিয়ে বেজোস লেখেন, ‘সেই পাঁচ বছর বয়স থেকে আমি মহাকাশ ভ্রমণের স্বপ্ন দেখছি।’ অভিযানটিকে তিনি ‘সেরা বন্ধুর সঙ্গে সেরা অ্যাডভেঞ্চার’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
ভিডিও বার্তায় বেজোস বলেন, ‘মহাকাশ থেকে পৃথিবী দেখা, এটা আপনাকে বদলে দেয়। এটা এই গ্রহের সঙ্গে, মানবতার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক বদলে দেয়। এটাই একমাত্র পৃথিবী। আমি এই অভিযানে যেতে চাই। কারণ, এ কাজ আমি আজীবন করতে চেয়েছি।’
২০ জুলাইয়ে উড্ডয়নের পর প্রায় ৪৭ মাইল ওপরে গিয়ে বুস্টার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে রকেটের যাত্রীবাহী অংশটি। এরপর নভোচারীরা আসন থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারবেন। সে সময় মিনিট তিনেকের জন্য ভরশূন্যতার অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন তাঁরা। এরপর পৃথিবীর পানে ফিরতি পথে যাত্রা শুরু হবে। সংক্ষিপ্ত সে যাত্রায় নভোচারীদের বিশেষ স্পেস স্যুট বা হেলমেটের প্রয়োজন হবে না বলে জানিয়েছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
জেফ বেজোস গত ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা দেন, নির্বাহী চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিয়ে আগামী ৫ জুলাইয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ ছেড়ে দেবেন প্রতিষ্ঠানটির ক্লাউড কম্পিউটিং বিভাগের প্রধান অ্যান্ডি জ্যাসিকে। সেই পরিবর্তনের সময় বেজোস বলেছিলেন, ব্লু অরিজিনসহ নিজের অন্য উদ্যোগগুলোতে তিনি আরও সময় ও শক্তি ব্যয় করবেন।
২০০০ সালে ব্লু অরিজিন প্রতিষ্ঠা করেন জেফ বেজোস। প্রতিষ্ঠানটি মূলত রকেট ইঞ্জিন তৈরি করে অন্য রকেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে। তবে সাধারণ মানুষকে সাব-অরবিটাল অভিযানে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে দীর্ঘদিন ধরেই মহাকাশ পর্যটনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬২ মাইল ওপরের এই স্তরকে মহাকাশের সীমানা বলা যেতে পারে।