করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার মুখে জার্মানিতে আজ (বুধবার)থেকে আবার কঠোর লকডাউন জারি করা হচ্ছে। জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যে কোথাও ঢিলেঢালা, কোথাও কড়াকড়ির কারণে সংক্রমণ প্রতিরোধে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। তাই দীর্ঘমেয়াদি লকডাউন জরুরি হয়ে পড়েছে। এখন করোনা প্রতিরোধে জার্মান সরকার সংক্রমণ সুরক্ষাবিষয়ক নতুন আইন করতে যাচ্ছে।
এর আগে জার্মানির ১৬ রাজ্যের সরকার সংক্রমণ পরিস্থিতির নিরিখে লকডাউন–সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিত। এখন থেকে করোনা–সংক্রান্ত বিষয়ে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। জার্মানিতে প্রতি লাখে সংক্রমণের হার ১০০–তে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও, এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে ১৪০–এ পৌঁছেছে।
জার্মান প্রেস এজন্সির বরাত দিয়ে ডের স্পিগেল পত্রিকাটি আজ মঙ্গলবার জানিয়েছে, জার্মানির মন্ত্রিসভা নতুন করে সংক্রমণ সুরক্ষা আইন পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন আইনে প্রতি লাখে সংক্রমণের হার ১০০–এর নিচে নামিয়ে আনতে বাধ্যবাধকতা ও নিষেধাজ্ঞাগুলো জাতীয় নির্দেশিকা অনুসারে জার্মানিজুড়ে বলবৎ হবে। এই নতুন নির্দেশিকার খসড়া ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নতুন নির্দেশিকায় জার্মানিজুড়ে রাত নয়টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত সবাইকে ঘর থেকে বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলো চালু থাকলেও শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে অন্তত দুইবার করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা থাকবে। বেশির ভাগ দোকান, অবসরকেন্দ্র, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে। খাদ্যপ্যণের বা পানীয়ের দোকান, চিকিৎসকের চেম্বার, গ্যাস–স্টেশন, সংবাদপত্রের বিক্রয়কেন্দ্র, বইয়ের দোকান ও ফুলের দোকান খোলা থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের তিন শ বিজ্ঞানী, গবেষক, পরিবেশবাদী, শিক্ষাবিদ, শ্রমিক ইউনিয়ন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি এবং রাজনীতিকের উদ্যোগে ‘জিরো কোভিড’ উদ্যোগটি জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনা প্রতিরোধী কৌশলনীতির সমালোচনা করেছে। একটি আবেদনে ইউরোপজুড়ে একযোগে কড়া লকডাউন জারির পক্ষে মতামত তুলে ধরা হয়েছে।
‘জিরো কোভিড’ (Zero Covid) উদ্যোক্তারা গত জানুয়ারি থেকেই ইউরোপজুড়ে কারখানা, নির্মাণকাজ এবং স্কুল ও সাধারণ কাজের বাধ্যবাধকতা স্থগিত করার দাবি জানিয়ে আসছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কার্যকরভাবে করোনা মহামারি মোকাবিলার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও, তাদের করোনার টিকা নিয়ে বিলম্বিত নীতি সমালোচনার মুখে পড়েছে।